অটিস্টিক শিশুরা সামাজিক সম্পর্ক তৈরী করতে ব্যর্থ হয়। স্বাভাবিক একটি শিশু বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় মা-বাবা, নিকটজন বা পরবর্তীতে অন্যদের সাথে যেভাবে সামাজিক সম্পর্ক তৈরী করে, অটিস্টিক শিশু তা করতে পারে না। স্বাভাবিক শিশু বৃদ্ধির সাথে সাথে বাবা-মার চোখে চোখ রেখে হাসে, চোখ ঘুরিয়ে দৃষ্টি দিয়ে মাকে অনুসরণ করে, কোলে ওঠার জন্য হাত বাড়ায়। অটিস্টিক শিশুরা বাবা-মা বা পরিচর্যাকারীর চোখে চোখ রেখে তাকায় না, মুখভঙ্গি বা শারীরিক অভিব্যক্তির মাধ্যমেও সে তার প্রতি অন্যদের সামাজিক আচরণের প্রত্যুত্তর দিতে পারে না। নিজের নাম বোঝার বয়সে এসব শিশুকে নাম ধরে ডাকা হলেও সে সাড়া দেয় না, এমনকি ফিরেও তাকায় না। সমবয়সী শিশুদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারে না, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ব্যাপারটাই সে বোঝে না। অন্য শিশুদের মাঝে রাখা হলেও সে একপাশে সরে যায় অথবা উদ্দেশ্যবিহীনভাবে কাউকে শারীরিক আঘাত করে বসে। অন্যদের ব্যাপারে সে কোন আগ্রহ বোধ করে না। সে আপনমনে থাকতে পছন্দ করে। দেখে মনে হয়, সে যেন একাকী, আলাদা, নিজস্ব জগতে বাস করে, যে জগতের সাথে অন্য কারো কোন সম্পর্ক নেই। কোন ধরণের আনন্দদায়ী বস্তু বা বিষয় সে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে জানে না। সাধারণত শিশু নতুন বা আকর্ষক কোন খেলনা হাতে পেলে বা তার জন্য উদ্দীপক কোন বস্তু বা বিষয় দেখতে পেলে অন্যদের দৃষ্টি সেই খেলনা, বস্তু বা বিষয়ের দিকে আকর্ষণ করে। কিন্তু অটিস্টিক শিশুদের বেলায় এসব বিষয়ে নিজস্ব আগ্রহ কখনো তৈরী হলেও এ নিয়ে কোন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় না। কোলে নেয়া বা আদর করা তারা পছন্দ করে না। কেউ আদর করতে গেলে হয় নিষ্পৃহ থাকে অথবা চিৎকার-কান্নাসহ অস্বাভাবিক আচরণ করে। বেশীরভাগ শিশু পারিবারিক পরিমন্ডলে ‘অমিশুক’ বলে চিহ্নিত হয় রোগ ধরা পড়ার আগেই।