সদস্যঃ তামিম আল আদনানী

সদস্য 8 মাস (since 10 এপ্রিল)
ধরণ নিবন্ধিত সদস্য
সুবিধাঃ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে পারবেন
মন্তব্য যোগ করতে পারবেন
উত্তরে ভোট দিতে পারবেন
মন্তব্যে ভোট দিতে পারবেন
অসম্মত ভোটপ্রদান  
পোষ্টে রিপোর্ট প্রয়োগ করতে পারবেন
সদস্যবৃন্দের দেওয়ালে পোস্ট করা হচ্ছে
সম্পূর্ণ নাম: তামিম আল আদনানী
আমার অবস্থান: Dhaka, Bnagladesh
আমার সম্পর্কে বিস্তারিত: লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার  ||   

ফেসবুক আইডিঃ https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6

ফেসবুক পেজঃ https://www.facebook.com/tamim.adnani8

__________________________________________________
__________________________________________________

ইসলাম যিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালা কে বাদ!

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid09ToHjBt1pXdwtLqvriCUXiCRXRk1qnyUSNTCWehpk5AsTu5J8z86FSa9gkTMR81dl

শত্রু-মিত্র যাচাইয়ের মূলনীতি-

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid0J5erpoJUyFv8VDzt3QAcoXyFFxPRSu1QHN9zVdSJE1kRekzMbXf1DfsKnwfh7NRil


সিলেবাসে ট্রা*ন্স মতবাদ: বৈশ্বিক কুফরের এক নিকৃষ্ট এজেন্ডা, সমাধান কোন পথে?

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid02vM3EAxbdw8CBXBQ1mZCiMt4XfYjbfnPCGhQsWWPCcwv8CfsSThwmX8MrUab62NPvl


রাম মন্দির উদ্বোধন: বাবরী মসজিদের কান্না

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid02ZzogCjBF3ZYM1HT8DXp8eECRFZVxjrjA2NujGuAq6nS2KxJ4U6dLxGwMy6pXJw21l


আল্লাহু আকবারের মর্ম অনুধাবন:  

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid02CvXVHhpia7KqpuF1LqGqswkw1tWmGUGr4opVezn1gCUXohzvEzgN9krp3JeZ3ch8l



কুরআনুল কারীমে বর্ণিত ঘটনা থেকে শিক্ষা


https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid02qHhbxbNzLGiziLBm6DHfqeHU1dyZ4MhtsNcEXJjdJNBA4KmBD3CFUQ87e8ABhGwul


আসুন, অহেতুক খেল-তামাশার ঘোর থেকে বেরিয়ে এসে উম্মাহকে নিয়ে ভাবতে শিখি।

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid05DkNGaTnCqr7cZcaKobeubn3FrpR5LkX2UhxkdNhpVJRXMEfAQPbJ98i5Lnf9stRl


দ্বীন কায়েমের কাজ ও সতর্কতা

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid02nkp9XEuDWrXbYtL7E7owusjWNMCWuqBVPQ8ttMsNqmj6HU29zerHtgzWUSVgRzsel


দোয়া- প্রিয়জনদের জন্য মূল্যবান উপহার  

https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6/posts/pfbid0K9FLj6yNZxHPKPconDaHnaaycjVZo9pfkSExJD8UvpP45kWZVXoAZtR5CPLYCd79l
আমার পেশা: লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার ||
আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা:
ফেসবুক আইডি লিঙ্ক: https://www.facebook.com/tamim.al.adnani6
প্রিয় উক্তি:

"তামিম আল আদনানী" র কার্যক্রম

স্কোরঃ 10 পয়েন্ট (র‌্যাংক # 544 )
আমি হলামঃ Level 1
প্রশ্নঃ 4
উত্তরঃ 0
মন্তব্যসমূহঃ 0
ভোট দিয়েছেনঃ 0 টি উত্তর
দান করেছেন: 0 সম্মত ভোট, 0 অসম্মত ভোট
প্রাপ্তঃ 0 সম্মত ভোট, 0 অসম্মত ভোট

তামিম আল আদনানী এর দেওয়াল

এই সদস্য তার দেওয়ালে নতুন পোষ্ট করার অনুমতি বাতিল করেছেন
উপমহাদেশের মুসলিমদের ভাগ্যাকাশে দূর্যোগের ঘনঘটা-
 .
উপমহাদেশের হিন্দুদের মুসলিম বিদ্বেষের ইতিহাস বহু পুরনো। যুগ যুগ ধরেই তারা মুসলিম বিদ্বেষ লালন করে আসছে। সুলতানী আমলে মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকলেও ব্রিটিশরা আসতেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ব্রিটিশদের সাথে হাত মিলিয়ে শুরু করে ভয়াবহ মুসলিম নির্যাতন। ব্রিটিশরা ক্ষমতায় থাকাকালীন সাধারনত হিন্দুদেরকেই রাজত্ব ও জমিদারী দান করতো। কিন্তু তারা একে প্রজাদের সেবা করার সুযোগ মনে না করে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের হাতিয়ার বানাতো। এমন কোন নির্যাতন ছিলোনা যা তারা মুসলিমদের উপর করতোনা। তারা নির্যাতনের এমন এমন পদ্ধতি আবিস্কার করেছিল যা কল্পনাকেও হার মানায়।
.
ইসলামী নাম রাখার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, এই ধরণের নাম রাখলে তাদের কর দিতে হতো, দাঁড়ির জন্য কর দিতে হতো, মুসলিমদের রীতি নীতি পালনে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গরু জবাই ছিল নিষিদ্ধ। হিন্দুদের পূজা পার্বণ এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক ছিল। এছাড়াও ইসলামবিরোধী ও মানবতাবিরোধী আরো অনেক  নিয়মনীতি ছিল, যা পালনে সবাই বাধ্য থাকতো। একটু এদিক সেদিক হলেই শুরু হতো ভয়াবহ নির্যাতন। সেসব নির্যাতনের কথা ভাবলে আজও ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে।
হিন্দুদের এসকল নির্যাতন থেকে মুসলিমদের মুক্তি দেয়ার জন্যই শহীদ তিতুমীর ও হাজী শরীয়তুল্লাহর মত বীরেরা (রহিমাহুমুল্লাহ) সেসময় ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
.
এভাবে প্রায় শতাব্দীকালেরও বেশি সময় ধরে মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালায় হিন্দুরা। এরপর ১৯৪৭ সালে যখন দেশভাগ হয় তখন নির্যাতনের সুযোগ হাতছাড়া হতে দেখে রাগে ক্ষোভে বিভিন্নস্থানে পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা লাগায়। এসব দাঙ্গায় সেসময় হাজার হাজার মুসলিম প্রাণ হারান। আজও থামেনি তাদের সেই হিংস্রতা। ভারতে গত পঁচাত্তর বছরে কয়েক হাজার দাঙ্গা বাঁধিয়েছে তারা। যার মাধ্যমে কয়েক লাখ মুসলিমকে হত্যা করেছে।
.
এসব দাঙ্গার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো...
 (১) ১৯৬৪ সালের কলকাতা দাঙ্গা, এই দাঙ্গায় অন্তত ৮শ মুসলমান নিহত হন
(২) নেলী গণহত্যা, ১৯৮৩ সালে আসামে সংঘটিত এই গণহত্যায় অন্তত দশ হাজার মুসলিম প্রাণ হারিয়েছেন।
(৩) মুরাদাবাদ গণহত্যা, ১৯৮০ সালে উত্তরপ্রদেশের মুরাদাবাদে সংঘটিত এই গণহত্যায় পুলিশের গুলিতে এবং দাঙ্গায় কয়েকশো মুসলিম নিহত হয়।
.
(৪) হাশিমপুরা গণহত্যা, ১৯৮৭ সালে উত্তর প্রদেশের মিরাট শহরে স্রেফ মুসলিম হওয়ার অপরাধে পুলিশ গুলি চালিয়ে অন্তত ৩৮ জন মুসলিমকে হত্যা করে এবং উগ্র হিন্দুদের আগুনে পুড়ে ও তরবারীর আঘাতে আরো অসংখ্য মুসলিমকে নিহত হয়।
(৫) ভাগলপুর দাঙ্গা, ১৯৮৯ সালে বিহারে সংঘটিত এই দাঙ্গায় অন্তত ১ হাজার মুসলমানকে হত্যা করা হয় এবং ৫০ হাজার মুসলমানকে ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।
(৬) বাবরী মসজিদ ধ্বংস পরবর্তী দাঙ্গা, ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংস এবং একে কেন্দ্র করে সংঘটিত দাঙ্গায় অন্তত দুই হাজার মুসলিমকে হত্যা করা হয়।  
.
(৭) গুজরাট দাঙ্গা, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০০২ সালে গুজরাটে সংঘটিত ওই দাঙ্গায় অন্তত ১০ হাজার মুসলিম নিহত হন।  
(৮) দিল্লি দাঙ্গা, ২০২০ সালে রাজধানী দিল্লিতে সংঘটিত এই দাঙ্গায় অন্তত পঞ্চাশজন মুসলিমকে হত্যা করা হয় এবং বিচারের নামে ভুক্তভোগী মুসলিম যুবকদের জেলে ভরে আরেকদফা নির্যাতন করা হয়।
.
এখানে আমরা বড় বড় কয়েকটি দাঙ্গার ঘটনা উল্লেখ করেছি। এগুলো ছাড়াও ভারতে অসংখ্য দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে, যাতে কয়েক লাখ মুসলিম প্রাণ হারিয়েছেন। ইদানিং আবার মুসলিম নিধনের নতুন পদ্ধতি আবিস্কার করা হয়েছে, অন্যায় অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে বা পুড়িয়ে হত্যা করা। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এমন ঘটনা। গত কয়েক বছরে এসব ঘটনায় কয়েকশো মুসলিম হতাহত হয়েছেন।    
.
কয়েক বছর ধরে উপমহাদেশের হিন্দুদের মাঝে বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান নিয়ে অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী জোরালো হয়েছে। জনমত গঠনের জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা নেত্রী এবং মন্দিরের সাধু সন্তরা জায়গায় জায়গায় নিয়মিত সভা সেমিনারের আয়োজন করছে। এসব সভায় প্রকাশ্যে মুসলিম গণহত্যার কথা বলা হচ্ছে। হিন্দু রাষ্ট্রের কাঠামো সম্পর্কে হিন্দু নেতারা বলছেনঃ এই রাষ্ট্রে মুসলিমদের কোন স্থান দেয়া হবেনা, কেউ থাকতে চাইলে তাকে অবশ্যই ঘর ওয়াপসি করতে হবে অর্থাৎ হিন্দু হয়ে থাকতে হবে। এরপরও যদি কেউ রয়ে যায় তাহলে তাদের সাথে আরাকানী মুসলিমদের মত আচরণ করা হবে অর্থাৎ গণহত্যা করা হবে। এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে মসজিদ মাদ্রাসা সহ কোন ধরণের ইসলামী নিদর্শন বাকি রাখবেনা তারা।
.
ভারত ধীরে ধীরে ভয়াবহ মুসলিম গণহত্যার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, এর জন্য যত ধরণের প্রস্তুতি নেয়া দরকার তার সবই নেয়া হচ্ছে। জায়গায় জায়গায় হিন্দু সাধু সন্তরা ধর্মসভার আয়োজন করছে। এসব সভায় কিভাবে নিজেকে হেফাজত করে মুসলিমদের হত্যা করতে হবে সেই সবক শেখানো হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরাও জনসভাগুলোতে মুসলিম বিরোধী বক্তব্য দিয়ে জনগনকে ক্ষেপিয়ে তুলছে।
ফেসবুক হোয়াটস্যাপ গ্রুপগুলোতে আরএসএসের সদস্যরা বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে হিন্দুদের মাঝে উগ্রতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। জায়গায় জায়গায় আরএসএস বজরংদল বিশ্বহিন্দু পরিষদ সহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হচ্ছে। এসব আয়োজনে ছোট ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে নারী পুরুষ সবাইকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। যেন সবাই মিলে পরিকল্পিতভাবে খুব সহজে মুসলিমদের হত্যা করতে পারে। জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর গ্রেগরি স্ট্যানটনের মতে ভারতে গণহত্যার ১০টি ধাপের নয়টি ধাপই পুর্ণ করা হয়েছে। এখন শুধু গণহত্যা করার ধাপটি বাকি আছে।  
.
শুধু সীমান্তের ওপারে নয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতেও এই বিষাক্ত হাওয়া এসে লেগেছে, আরএসএসের অধীনে এদেশে অনেকগুলো সংগঠন এই লক্ষ্যে কাজ করছে। সাম্প্রতিককালে দেশজুড়ে হিন্দুদের ব্যাপক বাড়াবাড়ি, মুসলিম মেয়েদের ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করা (সুযোগ পেলে ভারতে পাচার করা) এবং ফরিদপুরে দুই নির্মাণ শ্রমিককে হত্যা করা এর সামান্য কিছু উদাহরণ। আওয়ামী সরকারের পতন হলেও তাদের ষড়যন্ত্র থামেনি।
.
 ভারতের মিডিয়াগুলোতে ফেইক নিউজ ও ভিডিও পাঠিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টায় আছে তারা। আমরা যদি এখনই সচেতন না হই এবং সাধ্যমত প্রস্তুতি না নেই তাহলে হয়তো পরবর্তীতে অনেক বেশি আফসোস করতে হবে। কিন্তু সেই আফসোস আমাদের কোন কাজে আসবেনা। তাই আমাদের সবাইকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে এবং সাধ্যমত প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
15 নভেম্বর করেছেন তামিম আল আদনানী
বিশ্ব মুসলিমের প্রাণের চাওয়া- প্রতিষ্ঠিত হোক ইসলামী শরীয়াহ
.
বিশ্বের প্রতিটি তাওহীদবাদী মুমিনের দিলের তামান্না হল শরী@য়াহর ছায়াতলে জীবনযাপন করা এবং সবাই এক হয়ে খিলা@ফাহ আলা মিনহাজিন নুবুয়্যাহ প্রতিষ্ঠা করা। কারণ আমরা মানুষেরা হলাম দুনিয়াতে আল্লাহ তাআলার খলিফা বা প্রতিনিধি, প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের কাজ হল জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করা এবং নিজেরা মেনে চলা। মানবজাতির ইহকাল ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণ এই শরী@য়াহর মধ্যেই নিহিত রয়েছে। বর্তমানে দুনিয়াতে যে এত এত অন্যায় অপরাধ, চারদিকে মারামারি হানাহানি ও বিশৃঙ্খলা, এর সমাধান একমাত্র শরী@য়াহর মধ্যেই রয়েছে। শরী@য়াহ ছাড়া অন্য কোন উপায়ে এই অশান্ত পৃথিবীকে শান্ত করা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তাআলা।
আর স্রষ্টাই ভাল জানেন, কিভাবে চললে তার সৃষ্টি ভাল থাকবে, কোন ধরণের আইন প্রতিষ্ঠিত হলে দুনিয়াতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তিনিই ভাল জানেন কোন উপায়ে তার সৃষ্টিকে অন্যায় অপরাধ থেকে বিরত রাখা সম্ভব, কোন উপায়ে ধনী গরীবের বৈষম্য দূর করে সম্পদের সুষম বন্টন করা সম্ভব। তাই তিনি সেই অনুপাতেই আমাদের জন্য বিধি বিধান দিয়েছেন।
.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খোলাফায়ে রাশেদীন এবং পরবর্তী খলিফাগণ এই শরী@য়াহর মাধ্যমেই দুনিয়া থেকে সকল অন্যায় অবিচার দূর করে মানবজাতিকে এক শান্তিময় পৃথিবী উপহার দিয়েছিলেন। তাদের ন্যায় ইনসাফের ফলে দুনিয়া থেকে যাবতীয় অন্যায় ও বৈষম্য বিদায় নিয়েছিল। মানুষে মানুষে হানাহানি মারামারি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, অন্যায় অপরাধ কমতে কমতে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল, সবার মনে আল্লাহর ভয় জাগ্রত ছিল। যাকাতভিত্তিক অর্থব্যাবস্থার ফলে সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিদায় নিয়েছিল।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, লোকেরা যাকাত দেয়ার জন্য গরীব খুঁজতো, কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানায় গরীব খুঁজে পাওয়া ছিল অনেক কষ্টসাধ্য। সেসময় ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত এত বেশি মজবুত ছিল যে, কাফেররা মুসলিমদের উপর হামলা করা তো দূরের কথা চোখ তুলে তাকানোর সাহসও পেতোনা।
মুসলিমদের সাহসিকতা ও বীরত্ব দেখে তারা সর্বদা ভীত সন্ত্রস্থ থাকতো। চারদিকে ইসলামী রাষ্ট্রের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, কাফের দেশের নাগরিকরা তাদের রাজাদের জুলুম থেকে মুক্তির জন্য মুসলিম বাহিনীকে আমন্ত্রণ জানাতো।
.
পরবর্তীতে আমাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার ফলে যখন খিলাফার পতন হল এবং এর স্থলে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র নামক জুলুমতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হল, তখন জালিমরা তাদের জুলুমকে স্থায়ী করার জন্য ইসলামী শরী@য়াহর ব্যাপারে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা চালাতে শুরু করলো।
.
শরী@য়াহ শাসন ও ইসলামী দণ্ডবিধিকে তারা মানুষের সামনে বাঘ ভাল্লুকের চেয়েও ভয়ংকর বস্তু হিসেবে তুলে ধরলো। যেন মানুষ ভুলেও ইসলামী শরীয়া ফিরিয়ে আনার চিন্তা না করে। এখন হয়েছেও তাই, মানুষ কয়েক বছর পর পর নতুন জালিম নির্বাচন করে। তাদের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেলে আবার নতুন কাউকে নির্বাচন করে। এভাবেই জুলুমের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে উম্মাহ, কিন্তু শরীয়া ফিরিয়ে আনার ফিকির কারো মাথায় আসছেনা।
.
হে প্রিয় উম্মাহ! আর কতকাল আমরা এভাবে ধোঁকা খাবো? আর কতকাল কুফফারদের বানানো পদ্ধতিতে ধরায় শান্তি ফেরানোর অলিক স্বপ্ন দেখবো? আমাদের কি এখনো বোধোদয় হয়নি যে, এসব তন্ত্র মন্ত্র শুধুই ধোঁকা, জনতাকে নিপীড়ন করার হাতিয়ার?
.
হে দ্বায়ী ভাইয়েরা! আসুন আমরা সবাই মিলে মানুষের সামনে ইসলামী শাসনের সৌন্দর্য্য তুলে ধরি। সবাইকে ইসলামী শাসনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তুলি। মসজিদের মিম্বার এবং বয়ানের স্টেজগুলোতে অন্যান্য দ্বীনি বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি এইসব ব্যাপারেও বয়ান করি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন।
08 নভেম্বর করেছেন তামিম আল আদনানী
এখনো আমরা স্বাধীন হতে পারিনি।
.
বাংলাদেশ এক জঘন্য স্বৈরাচারী, সন্ত্রাসী, খুনি ও ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের কবল থেকে নিস্তার পেয়েছে। দেশের নিরপরাধ মানুষ নির্ভয়ে বাঁচার অধিকার ফিরে পেয়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট, এই ১৬ বছরের শাসনামলে গুণ্ডামি, চাঁদাবাজি, হত্যা, জেল, জুলুম, গুম, গণহত্যা— এমন কোনো অন্যায় নেই যা শেখ হাসিনা ও তার ক্ষমতাভোগীরা করেনি। বিএনপি, জামাত-শিবির, রাজাকার, জ/ঙ্গী, সন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী —ইত্যাদি তকমা সাঁটিয়ে খুব সহজেই যে কারো উপর ক্রসফায়ার বা জেল-জুলুমকে বৈধ করে নিত এই খুনী হাসিনা। তাছাড়া বিশেষত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সে ছিল অত্যন্ত কঠোর।
.
অখণ্ড ভারতজুড়ে রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার একনিষ্ঠ সেবক হয়ে সে ছিল বাংলাদেশি এজেন্ট। হিন্দুদের ক্ষমতায়ন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান ও সর্বপ্রকারের সুযোগ সুবিধা প্রদান ছিল এই হাসিনার প্রধান কাজ। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও এদেশের মুসলিমরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের দ্বারা জুলুমের শিকার হয়েছে প্রতিনিয়ত। শেখ হাসিনার ভারতপ্রীতির বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে মেনে নিতে হয়েছে জেল-জুলুম বা হত্যা। বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমরা শুরু থেকেই জাতিকে সতর্ক করে আসছিলাম। দৃঢ়চিত্তে বলে আসছিলাম: শেখ হাসিনা ইসলাম ও এদেশের মুসলিমদের শত্রু এবং এদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘ প্রায় ষোল বছর পর আমরা এরকম এক স্বৈরাচারীর হাত থেকে মুক্তি পেলাম।
.
এ আন্দোলনে যারা আহত-নিহত হয়েছেন তাদের সকলের জন্যই আমরা দোয়া করি। নিহত ঈমানদারদেরকে আল্লাহ্‌ তাআলা শাহাদাতের মর্যাদা দান করে জান্নাতবাসী করেন আর আহতদের সুস্থতাকে তিনি ত্বরান্বিত করেন, আমীন। যারা দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তারা ইসলামের সাথে শত্রুতা না করলে তাদেরকে   অভিনন্দন।
.
প্রিয় উম্মাহ! তবে আমি আজকে আপনাদের একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ধুলোর আস্তর সরিয়ে স্পষ্ট করে দিতে চাই— “এ স্বাধীনতা আমাদের পূর্ণাঙ্গ ও প্রকৃত স্বাধীনতা নয়”। কেননা, এখনো আমরা গণতন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ, স্বাধীন হতে পারিনি। এখনো আমেরিকার দাসত্বে বাঁধা আমাদের জীবন, স্বাধীন হতে পারিনি। সেক্যুলারিজম, ন্যাশনালিজম, লিবারেলিজমসহ হাজারটা কুফরী ইজম বা মতবাদ আমদের মুসলিম সমাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে।
.
আপনি যদি মনে করে থাকেন, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশে শতভাগ বাকস্বাধীনতা ফিরে এসেছে, তাই আপনি সব জায়গায় জিহাদের কথা, শাহাদাতের কথা, ইসলামী খিলাফাহর কথা আলোচনা করতে পারবেন তাহলে আপনি স্বপ্নের জগতে বাস করছেন। বাস্তবতা হল এখনও আপনি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারবেন না। জিহাদের ফরজিয়্যাত, শাহাদাতের ফজীলত, ইসলামী খিলাফাহর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলতে পারবেন না। আল কায়েদার মানহাজ নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন না। তালিবানের রাষ্ট্রনীতি নিয়েও আলোচনা করতে পারবেন না। তাহলে আপনি টেররিস্ট বা সন্ত্রাসী হয়ে যাবেন।
কারণ, এখনো এদেশ সেক্যুলার ব্যবস্থাতেই পরিচালিত হচ্ছে, এখনো এদেশের উপর আমেরিকার কতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান আছে। আমরা শুধু শাসক পরিবর্তন করেছি,  (এবং এ পরিবর্তন ইতিবাচকও বটে ইনশাআল্লাহ,যেহেতু এর দ্বারা জুলুম কমেছে ও তুলনামূক স্বাধীনতা বেড়েছে) কিন্তু  আমরা এখনো দাসত্বের অবসান ঘটাতে পারিনি।
.
তাই, ভালো করে মনে রাখবেন, আমরা আজও পরাধীন। যতদিন না আমরা মুসলিমরা অন্য কোনো কাফের রাষ্ট্রের আধিপত্য থেকে মুক্ত স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠন করতে পারছি, ততদিন আমরা স্বাধীন নই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি দেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত করবেন? না! তিনি বরং গণতন্ত্র-ই প্রতিষ্ঠা করবেন। গণতন্ত্রের প্রভূ তো আমেরিকা। যে রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের চর্চা হবে সে রাষ্ট্র আমেরিকার দাসত্বকেই মেনে নিল। আমাদের প্রকৃত মুক্তি ও স্বাধীনতা একমাত্র ইসলামী খিলাফতের মধ্যেই নিহিত। তাই আবারো বলছি, আমরা এখনো স্বাধীন হতে পারিনি। তবে একদিন আমরা অবশ্যই প্রকৃত স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করব ইনশাআল্লাহ্‌। সে আনন্দ অতীতের সকল আনন্দকে ম্লান করে দেবে।
31 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে কয়েকটি কথা
.
১। আজকের এই বিজয় ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আধিপত্যের জুলুমের শাসনের বিরুদ্ধে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের এক বিজয়। সুতরাং রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিগত ১৬ বছরে অন্যায়-অবিচার ও জুলুমের যে ক্যান্সার তৈরি করা হয়েছে, তার মূলোৎপাটন করা না হলে এর সুফল এদেশের মানুষ কখনোই পাবে না।
২। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়াসহ বিগত প্রায় ১৬ বছরে যত মানুষ নির্যাতিত হয়েছে, হত্যা,গুম-খুন,হামলা-মামলার শিকার হয়ে অপরিসীম যন্ত্রণা সহ্য করেছেন, তাদের কান্নাগুলো অভিশাপ হয়েই আজ খুনিদের পতন ঘটিয়েছে। সুতরাং তাদের হৃদয়ের যন্ত্রণা উপশমের প্রচেষ্টা অব্যাহত না থাকলে, তাদের বোবা কান্নাগুলো আবার অভিশাপ হয়ে নতুন অপরাধীদেরকে তাড়া করবে।
৩। বিগত প্রায় ১৬ বছরে যারা অপরাধ করেছে এবং সেই অপরাধে সহযোগী ও সমর্থক হয়ে তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে (হোক রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক-আধা সামরিক বাহিনী বা অন্য যেকোনো ব্যক্তি), তাদের প্রত্যেককে তাদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৪। উলামায়ে কিরামসহ জালিমের কারাগারে বন্দী যত নীরিহ মানুষ রয়েছে, তাদের সকলকে অবিলম্বে সসম্মানে মুক্তি দিয়ে তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। নিরপরাধ কোনো মানুষকে যেনো একটা ফুলের টোকাও দেওয়া না হয়। আপনার সাথে ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো দ্বন্দ্ব কারো থাকতেই পারে কিন্তু এই সুযোগে তাকে কোনো ধরণের ক্ষতি করা হলে তা হবে সম্পূর্ণ জুলুম। আর জালিমের কোনো ক্ষমা নেই, যা আজ আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। আর এক জালিমের বিরোধিতা করে নিজেই জালিম হয়ে যাওয়ার চেয়ে ঘৃণ্য অপরাধ আর হতে পারে না।
৬। ব্যক্তিগত কিংবা জাতীয় কোনো সম্পদের কোনো ধরণের ক্ষতি করা যাবে না। কারণ এই সম্পদের মালিক এদেশের মানুষ। অপরাধী ও তাদের সমর্থকদের অবৈধ সম্পদ ক্রোক করে তা জনগণের জন্য ব্যয় করতে হবে। সম্পদ ক্ষতি করা মানে আমি আমার নিজেরই ক্ষতি করছি।
৭। এদেশে বিগত ১৬ বছর ধরে সবচেয়ে নির্যাতিত হয়েছেন আলিম-উলামা ও ইসলামপন্থীগণ। সুতরাং তাদেরকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। যেখানে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয় না, সেখানে জুলুমের রাজত্ব কখনো বন্ধ হবে না। তথাকথিত সুশীল ও নিরাপদে থাকা ব্যক্তিদেরকে ক্ষমতায় বসালে একই জুলুমের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কোনো সন্দেহ নেই।
৮। যে বীর ছাত্ররা এই আন্দোলন শুরু করেছে এবং এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, তাদেরকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। এ দেশ এবং দেশের জনগণের বিষয়ে সেনাবাহিনী কিংবা সাবেক সরকারের কর্মকর্তাদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যাবেনা, বরং বিপ্লবী ছাত্র-জনতাই এ বিষয়ে ফায়সালা করবে।
৯।  ইসলাম হচ্ছে একমাত্র পূর্ণাংগ ও ইনসাফভিত্তিক জীবনব্যবস্থা। সুতরাং সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের বিধানের আলোকে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক আদর্শ সমাজ পরিচালনা করা হলেই জুলুমের চক্র বন্ধ করা সম্ভব। অন্যথায় ঘুরেফিরে একই জুলুম আবার ফিরে আসবে, আজ কিংবা কাল।
28 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
আল্লাহ তাআলা জিহাদকে ইসলামের হেফাজতের জন্য পাঠিয়েছেন


ধ্বংসের জন্য পাঠাননি। নবী আলাইহিস সালাম এবং সাহাবায়ে কেরাম জিহাদকে এই দ্বীনের মুহাফিজ ভাবতেন। এ কারণে তাঁরা জিহাদের পথে এত ত্যাগ এবং কোরবানীর বিনিময়ে এই দ্বীনকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। অতএব যারা বর্তমানে জি@হাদকে মসজিদ-মাদ্রাসা ধ্বংসের কারণ মনে করে, তারা খুব স্পষ্টভাবেই নববী চিন্তার বিপরীতে অবস্থান করছে।
17 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, গত কয়েক বছর থেকে আমি আপনাদেরকে ভারতের হি*ন্দু-ত্ব'বাদী শক্তি ও তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের ব্যাপারে বারবার সতর্ক করে আসছি। বিভিন্ন লেকচারে তুলে ধরেছি উগ্র হিন্দুরা মুসলিম নিধনে ও রামরাজ্য প্রতিষ্ঠায় কত ভয়ংকর ছক এঁকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে! এ দেশের ক্ষমতার মসনদে চেপে বসা জালিম তা^গু`ত হাসিনা সরকার দিনদিন কীভাবে হি*ন্দু-ত্ব'বাদের তাবেদারি করে চলেছে!  
হ্যাঁ, প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, সময় যতই গড়াচ্ছে, গো-পূজারিদের আস্ফালন ততই বেড়ে চলেছে! ভারতের মতো বাংলাদেশেও আজ উগ্র হিন্দুদের ঔদ্ধত্য চরম মাত্রায় পৌঁছেছে!  
.
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের দেশে আজ তুচ্ছ অভিযোগ তুলে স্রেফ সন্দেহের বশে মুসলিমদের নৃশংসভাবে খুন করার মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে! মুসলিমদের হুমকি দেয়া হচ্ছে! পূজাতে অস্ত্র উঁচিয়ে শক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে! প্রকাশ্যে উচ্চ আওয়াজে ‘জয় শ্রীরাম’-এর ¯স্লোগান তোলা হচ্ছে! শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঘটা করে উদযাপন করা হচ্ছে শিরকি উৎসব; পক্ষান্তরে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ইসলামের বিধিবিধান পালনে বাঁধা প্রয়োগ করা হচ্ছে! প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম নারীদের ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রি করার এবং হিন্দু বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে!   
.   
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লীতে উগ্র হিন্দু স*ন্ত্রা*সীদের হাতে দুই মুসলিম সহোদরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন। মুসলিম নিধনে এ দেশের উগ্র হিন্দুদের আস্ফালন আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বোঝার জন্য এ হৃদয়বিদারক ঘটনাই যথেষ্ট! মন্দিরে আগুন লাগানোর অভিযোগ এনে মন্দিরের পাশে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত হত-দরিদ্র নির্মাণশ্রমিকদের ওপর উগ্র হিন্দুরা সংঘবদ্ধভাবে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে দুই মুসলিম সহোদর ভাইকে হত্যা করেছে! মারাত্মকভাবে আহত করে দীর্ঘ সময় বন্দি করে রেখেছিল আরও চার শ্রমিককে! কোনো প্রমাণ ছাড়াই শুধু সন্দেহের বশে হত-দরিদ্র মুসলিম দিনমজুরদের ওপর এমন নৃশংস হামলা চালায় হিন্দু সন্ত্রাসীরা! এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর পাশবিক আনন্দ প্রকাশ করেছে এ দেশের উগ্র হিন্দু সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত নেতা-কর্মীরা!
.
এ দেশের তথাকথিত সুশীল নামক অথর্ব কীটগুলোও আজ মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে! মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলোও ঘটনার বিস্তারিত তুলে না ধরে অত্যন্ত দায়সারাভাবে সামান্য কিছু সংবাদ প্রকাশ করেছে! তাদের শিরোনাম দেখে অনেকে খুনের শিকার দুই মুসলিম সহোদরকে অপরাধী ভাবতে পারে! অথচ আজ যদি ঘটনা তার বিপরীত হতো, এভাবে কোনো এক হিন্দুর লাশ পড়ত, তবে সুশীল শ্রেণি ও মিডিয়াপাড়া সেই হিন্দুকে নিরপরাধ প্রমাণে এবং মুসলিমদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে গলা ফাটিয়ে ফেলত!  
.
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, আপনারা হয়তো ভেবে অবাক হচ্ছেন, এ দেশের সংখ্যালঘু উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদীরা কীভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের ওপর আক্রমণের এতটা সাহস পায়! কীভাবে তারা মুসলিমদের হুমকি দিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে! এ দেশে তারা মুসলিমদের তুলনায় সংখ্যায় খুব অল্প হলেও তাদের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও দুঃসাহস দেখানোর প্রধান কারণ দুটো।
একদিকে তারা ভারতের উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদী শক্তি ও ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারই মতাদর্শ অনুযায়ী কাজ করছে, অপরদিকে তারা ভারতের মদদপুষ্ট হাসিনা সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পাচ্ছে। তারা নির্ভয়ে আছে, তাদের যেকোনো অন্যায়ে এ দুই শক্তি তাদের পাশেই থাকবে। হ্যাঁ, দিনদিনই তারা এ দুই শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানান প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে!
এ দেশের উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদীদের আর কসাই মোদির টার্গেট এক ও অভিন্ন। এরা কসাই মোদির মতোই মুসলিমদের রক্তখেকো। উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদী ভারতের হোক বা বাংলাদেশের হোক, রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করাই এদের লক্ষ্য।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই এরা ইসলামের নিদর্শনাবলিকে মুছে ফেলার প্রয়াসে কাজ করে চলেছে। এদের নির্দেশ বাস্তবায়ন ও এদেরকে খুশি করার জন্যই এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইফতার মাহফিল বন্ধের ঘোষণা এসেছিল! এদেরকে খুশি করার জন্যই স্কুল-কলেজগুলোতে আজ ঘটা করে পূজার উৎসব চলছে! মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো ইমানবিধ্বংসী নানান কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে উদযাপন করা হচ্ছে!
.
মুসলিমপ্রধান এ দেশে হি*ন্দু-ত্ব'বাদের এমন ভয়ংকর আগ্রাসন সত্ত্বেও কেবল গদি টিকিয়ে রাখতেই হাসিনা ও তার লীগবাহিনী ভারত ও হি*ন্দু-ত্ব'বাদের ক্রিড়নকে পরিণত হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমাদান বিষয়ক আলোচনা করার কারণে সাধারণ মুসলিম ছাত্রদেরকে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে! বুঝেশুনে হোক কিংবা না বুঝে হোক, আওয়ামিলীগ ও তাদের প্রতিটি অঙ্গসংগঠন বরাবরই ভারত ও হিন্দুদের স্বার্থকেই রক্ষা করছে। হিন্দুদের শিরকি ধর্মবিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করার মিশনে তারা সহযোগিতা করে যাচ্ছে!     
.
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, এমতাবস্থায় আমাদের করণীয় কী, তা নির্ধারণের আগে হি*ন্দু-ত্ব'বাদ এবং এদেশে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদেরকে আমাদের চিনে রাখতে হবে। হি*ন্দু-ত্ব'বাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদেরকে কাছে উগ্র হিন্দুদের বিচার দাবি করে হিন্দুদের আগ্রাসনকে দমানো যাবে না। ভারতের মোদি সরকার হোক কিংবা এদেশে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী হোক - পুরো হি*ন্দু-ত্ব'বাদের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধেই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। হি*ন্দু-ত্ব'বাদের ভয়ংকর মিশনের ব্যাপারে সচেতন থাকার পাশাপাশি গাজওয়াতুল হিন্দের টার্গেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করে সামনে এগুতে হবে।
.
মুসলিমদের হেনস্থা ও নিধনের লক্ষ্যে হিন্দুদের সাজানো সব নাটক সম্পর্কে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। পাড়ায়-মহল্লায় সকল মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যেন একজন সাধারণ মুসলিমকেও উগ্র হিন্দুরা সন্দেহের বশে আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে। বিয়ে করে ইসলাম গ্রহণের প্রলোভন দেখানো হিন্দু যুবকদের প্রেমের ফাঁদ থেকে মুসলিম মেয়েদের দূরে থাকতে হবে। কাফির-মুশরিকদের সাথে মুমিনদের কোনো বন্ধুত্ব ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না।
.
মুসলিমদের নিজেদের মাঝে দ্বন্দ্ব-বিবাদ এড়িয়ে ঐক্যের ভিতকে মজবুত রাখতে হবে। ফুরুয়ি ইখতিলাফ নিয়ে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। সর্বোপরি মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে আল্লাহর জমিন থেকে শিরক ও কুফরের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে দুআ করি, ফরিদপুরের মধুখালীতে উগ্র হিন্দুুদের হাতে নিহত দুই মুসলিম সহোদর ভাইকে তিনি শাহা@দাতের মর্যাদা দান করুন। তাদের পরিবার-পরিজনদের সবরে জামিল ইখতিয়ার করার তাওফিক দিন। আমীন, ইয়া রব্বাল আলামীন।
15 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা পেতে হলে-

শরীর সুস্থ থাকলে মুখে খাবারের স্বাদ ও মজা অনুভব করা যায়। অসুস্থ শরীরে খাবার অনেক মজাদার ও সুস্বাদু হলেও তেতো এবং মজাহীন মনে হয়। তদ্রুপ ঈমান ও আমলের মজা অনুভবের জন্য সুস্থ ও খাঁটি ঈমান থাকা জরুরী। সুস্থ ও খাঁটি ঈমান ব্যাতিরেকে ঈমান ও আমলের  স্বাদ অনুভব করা সম্ভব নয়। ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা অনুভব করতে হলে কতগুলো গুণ অর্জন করা জরুরী। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ذَاقَ طَعْمَ الْإِيمَانِ مَنْ رَضِيَ بِاللهِ رَبّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمّدٍ رَسُولًا.
ঐ ব্যাক্তি ঈমানের প্রকৃত মজা অনুভব করবে, যে আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীনরূপে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূলরূপে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে। (সহীহ মুসলিম ৩৪)
.
এই হাদীস থেকে বোঝা গেল, কোন ব্যাক্তি যদি আল্লাহর ইবাদত, রাসুলের আনুগত্য ও ইসলামের বিধি বিধানকে মনে প্রাণে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করে নেয়, তাহলে সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ অনুভব করবে এবং কোন বিধান বাহ্যত কঠিন এবং কষ্টকর মনে হলেও এতে সে এক অপার্থিব স্বাদ খুঁজে পাবে। পক্ষান্তরে আল্লাহ রাসুল ও ইসলামের সাথে কারো সম্পর্ক যদি হয় শুধুই বংশীয়; বাবা মা মুসলিম তাই সেও মুসলিম, কিন্তু তাঁদের সাথে তার দিলের সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি, তাহলে সে ঈমানের প্রকৃত মজা ও স্বাদ অনুভব করতে পারবেনা। ইসলামের অনেক বিধান তার কাছে এই যুগে অচল ও কঠিন মনে হবে।  
.
অপর এক হাদীসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ثَلاَثٌ مَنْ كُنّ فِيهِ وَجَدَ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ: أَنْ يَكُونَ الله وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمّا سِوَاهُمَا، وَأَنْ يُحِبّ المَرْءَ لاَ يُحِبّهُ إِلّا لِلّهِ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النّارِ.
তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে সে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া, কাউকে ভালোবাসলে শুধু আল্লাহরই জন্য ভালোবাসা, আর কুফুরীতে ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা করা, যেমন সে ঘৃণা করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে। সহীহ বুখারী ১৬, সহীহ মুসলিম ৪৩
.
এই হাদীসের বক্তব্য আগের হাদীসের বক্তব্যের প্রায় কাছাকাছি। এই হাদীসের সারমর্ম হলো-ঈমানের মিষ্টতা ঐ ব্যক্তিই অনুভব করবে, যার অন্তর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালবাসায় সিক্ত থাকবে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসাকে জগতের সবকিছুর উর্ধ্বে স্থান দেবে। তার সব কাজে আল্লাহ ও তার রাসূলের ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জনই লক্ষ্য থাকবে। অন্য কারো প্রতি যদি ভালবাসা হয়, সেটিও হবে সম্পূর্ণ এই ভালবাসার অধীন।
আর ইসলাম তার কাছে এতই প্রিয় যে, ইসলাম ছেড়ে কুফরীর দিকে ফিরে যাওয়া অথবা ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোন তন্ত্র মন্ত্র ও মতবাদ গ্রহণ করা আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়েও বেশি অপছন্দনীয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা অনুভব করার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা অনুভব করার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন
11 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক যেমন হবে-

আজকাল তো আমরা ঈমানী বন্ধন বলে যে কিছু একটা আছে সেটাই ভুলে গেছি। এখন ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা হয় ভাষা,জাতি,অঞ্চল ইত্যাদির ভিত্তিতে। অথচ মুমিন হিসেবে আমাদের ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার মাপকাঠি হওয়ার দরকার ছিল ঈমান। পৃথিবীর শেষ প্রান্তেও যদি একজন মুমিন থাকে সে আমার ভাই। আমি এটা দেখবোনা সে কি আফ্রিকান নাকি বাংলাদেশী কিবা কাশ্মীরি। তার ভাষার সাথে আমার ভাষার মিল আছে কি নেই এটাও আমি দেখবোনা। তার মাজহাব-মাসলাক কী সেটাও আমার দেখার বিষয় নয়। আমি দেখবো তার ঈমান আছে কিনা।
.
পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক একজন মুমিনের সাথে আরেকজন মুমিনের সম্পর্ক হবে ভালোবাসা, দয়া এবং মুহাব্বতের। নুমান ইবনে বশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
تَرَى المُؤْمِنِينَ فِي تَرَاحُمِهِمْ وَتَوَادِّهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ كَمَثَلِ الجَسَدِ، إِذَا اشْتَكَى عُضْوًا تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ جَسَدِهِ بِالسّهَرِ وَالحُمّى.
মুমিনদেরকে দেখবে পরস্পরের প্রতি দয়া, ভালোবাসা ও মমতার ক্ষেত্রে এক দেহের ন্যায়। দেহের একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে (যেমন) গোটা দেহ অনিদ্রা ও জ্বরাক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে তার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে (মুমিনদের অবস্থাও এরকম, একজন আক্রান্ত হলে সবাই তার সাহায্যে ছুটে আসে)। -সহীহ বুখারী ৬০১১,  সহীহ মুসলিম ২৫৮৬
.
মুমিনদের পরস্পরের মাঝে ঈমানী বন্ধন কতটুকু দৃঢ় হওয়া উচিত তা আমরা এই হাদীস থেকে উপলব্ধি করতে পারি। শুধু ঈমানী যোগসূত্রের কারণেই তারা একে অপরকে ভালোবাসে, একে অপরের প্রতি মমতা, ভালোবাসা ও হৃদ্যতা পোষণ করে।
 পৃথিবীর কোথাও কোনো মুমিন আক্রান্ত হলে সবাই তার জন্য এগিয়ে আসে, তার পাশে দাঁড়ায়, প্রয়োজনে নিজের জান দিয়ে হলেও তাঁকে সাহায্য সহযোগিতা করে এবং জুলুম হতে রক্ষা করে।  ঈমানের দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও যদি কারো মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলো না থাকে, তাহলে তার উপলদ্ধি করা উচিত যে, তার এখনো পূর্ণাঙ্গ ও খাঁটি ঈমান নসীব হয়নি। আমাদের আদর্শ সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম সবাই এই সকল গুণে পরিপূর্ণ গুনান্বিত ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন,
 رُحَماءُ بَيْنَهُمْ
তারা একে অপরের প্রতি অত্যন্ত দয়াদ্র। সূরা ফাতহ-
.
অপর এক হাদীসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক কতটুকু দৃঢ় হওয়া উচিত, তা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন। হাদিসটি হল –
আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِنّ المُؤْمِنَ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ، يَشُدّ بَعْضُهُ بَعْضًا وَشَبّكَ أَصَابِعَهُ.
মুমিনরা একে অপরের জন্য অট্টালিকার ন্যায়। যার এক অংশ অপর অংশকে মজবুত করে রাখে। তারপর তিনি (বুঝানোর জন্য) তাঁর এক হাতের আঙ্গুল অপর হাতের আঙ্গুলের মাঝে প্রবেশ করে দেখালেন। -সহীহ বুখারী ৪৮১,২৪৪৬, সহীহ মুসলিম ২৫৮৫
.
একটি ভবনের জন্য যেমন ভিত,খুঁটি,ছাদ সবগুলো একটি অপরটির জন্য অপরিহার্য,একটি অপরটি ছাড়া দূর্বল এবং শক্তিহীন এবং একে অপরের পরিপূরক।  তেমনি মুমিনরা সবাই একটি ভবনের ন্যায় , এই ভবনের কেউ ভিত, তো কেউ খুঁটি, আবার কেউ ছাদ। সবাই একে অপরের সহযোগী। একজন বিপদে পড়লে অন্যরা তার সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।  
ইবনু বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ এই হাদিসে মুমিনদের আখিরাতের বিষয়ে এবং দুনিয়াবি জায়েজ বিষয়ে একে অপরের সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অন্যন্য মুসলিম ভাই বিশেষত মজলুম মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন
08 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
আমাদের মনে অনেক সময় ভালো কাজ করার প্রেরণা আসে এবং সেই কাজটি আঞ্জাম দেয়ার মত সুযোগও থাকে। তখন অনেকেই এই ভেবে সেই কাজটা বিলম্ব করি যে, এখন থাক! সময় তো আছেই, পরে করে নেয়া যাবে। কিন্তু এই ভাবনা সঠিক নয়। বরং কোন ভালো কাজ করার ইচ্ছা মনে জাগলে এবং সুযোগ থাকলে তৎক্ষণাৎ করে ফেলা উচিত। দেরি করা উচিত নয়। কারণ আমি তো জানিনা পরে আর সেই সুযোগ পাবো কিনা বা ঐ মানসিকতা বহাল থাকবে কিনা।  
সুরা আনফালের ২৪ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَجِیۡبُوۡا لِلّٰهِ وَ لِلرَّسُوۡلِ اِذَا دَعَاکُمۡ لِمَا یُحۡیِیۡکُمۡ ۚ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ یَحُوۡلُ بَیۡنَ الۡمَرۡءِ وَ قَلۡبِهٖ وَ اَنَّهٗۤ اِلَیۡهِ تُحۡشَرُوۡنَ ﴿۲۴﴾
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও; যখন তিনি তোমাদেরকে এমন জিনিসের দিকে আহবান করেন যা তোমাদেরকে জীবন দান করবে। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝে অন্তরায় হন। আর অবশ্যই তোমাদেরকে তাঁর নিকট একত্রিত করা হবে। (সুরা আনফাল-২৪)  
একারণে আমাদের সবার উচিত হবে, যখনই মনে ভালো কোনো কাজের চিন্তা আসবে, সামর্থ্য থাকলে সাথে সাথে করে ফেলা, দেরি না করা।  কারণ হতে পারে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হয়ে পরে আমার থেকে এই কাজের তাওফিক ছিনিয়ে নেবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করুন।
পাশাপাশি আরো একটি দোয়ায় মনোযোগী হতে পারি আমরা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়াটি খুব বেশি বেশি পড়তেন। আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি দোয়া খুব বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো-
يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ
অর্থাৎ হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখুন।
আনাস রাদিয়াল্লাহু বলেন: আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ। আমরা তো আপনার প্রতি এবং আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার প্রতি ঈমান এনেছি, এরপরও কি আপনি আমাদের ব্যাপারে কোনোরকম আশংকা করেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, কেননা সমস্ত বান্দার অন্তরসমূহ রহমানের দুই আঙ্গুলের মাঝে রয়েছে। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন। তিরমিজি ২১৪০
05 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও ট্রল-বিদ্রুপ করা ঈমান পরিপন্থী কাজ
  
বর্তমানে আমাদের মধ্যে যে ব্যাধিটি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, সেটি হল বিরোধী মতের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল না থাকা এবং কারো সাথে মতের সামান্য অমিল হলে তার বিরুদ্ধে গালি-গালাজ ও ট্রলের অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। সাধারণদের মাঝে তো বটেই দ্বীনদার শ্রেণির মাঝেও এই রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
.
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজর বুলালেই দেখা যায়, আমাদের ভাইরা একে অন্যকে এমন নোংরা ভাষায় আক্রমণ করছেন যেগুলো মুখেও আনা যায়না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিভিন্ন জায়গায় দ্বীনি মাহফিল ও মজলিসগুলোতেও এখন ঈমান আমলের বয়ানের পাশাপাশি গালিগালাজ ও গীবতের চর্চা হয়।   
.
কারো সাথে মতবিরোধ হলে বা কারো ফাতওয়া-মাসাইল ও কর্মকান্ড ভুল মনে হলে সংশোধনের নিয়তে দরদের সাথে আলোচনা করা যায়। এর জন্য সালাফদের রেখে যাওয়া নীতি ও আদর্শ আমাদের সামনে আছে। কিন্তু গালি গালাজ করা, ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করা, পূর্বের এমন পাপ কাজ যার জন্য সে অনুতপ্ত হয়েছে সেসব নিয়ে আলোচনা করা কোনভাবেই সংশোধনের পদ্ধতি হতে পারেনা। অথচ এই কাজগুলো অনেকে দ্বীনের কাজ মনে করে করছে। এসব যে গুনাহের কাজ এই অনুভূতিও নেই অনেকের মাঝে। যারা এই কাজগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি তাদের সামনে আজ দুটি হাদীস উল্লেখ করবো। আশা করি হাদীসদুটিই আমাদের সংশোধনের জন্য যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
.
১। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطّعّانِ، وَلَا اللّعّانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ.
মুমিন কটুভাষী ও লানতকারী হতে পারে না এবং অশ্লীল ও অশালীন কথা বলতে পারে না। তিরমিযী ১৯৭৭
.
২। আবু বারযা আল আসলামী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
يَا مَعْشَرَ مَنْ آمَنَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يَدْخُلِ الْإِيمَانُ قَلْبَهُ! لَا تَغْتَابُوا الْمُسْلِمِينَ وَلَا تَتّبِعُوا عَوْرَاتِهِمْ؛ فَإِنّهُ مَنْ يَتّبِعْ عَوْرَاتِهِمْ يَتّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ، وَمَنْ يَتّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ فِي بَيْتِهِ.
হে ঐ সকল লোক, যারা মুখে ঈমান এনেছে, কিন্তু ঈমান এখনো তাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, তোমরা মুসলমানদের গীবত করো না, তাদের অপ্রকাশিত দোষ-ত্রুটির অনুসন্ধান করো না, কেননা যে ব্যক্তি তাদের দোষ অনুসন্ধান করবে, আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধান করবেন। আর আল্লাহ কারো দোষত্রুটি তালাশ করলে তাকে তার ঘরের মধ্যেই অপদস্থ করে ছাড়বেন। মুসনাদে আহমাদ ১৯৭৭৬, সুনানে আবু দাউদ ৪৮৮০
.
এই হাদীস থেকে বোঝা গেল যে, মুসলিমদের দোষচর্চা করা, তাদের দোষ ত্রুটি প্রকাশে উৎসুক হওয়া মূলত মুনাফিকদের কাজ, যা এমন লোকদের থেকেই প্রকাশ পেতে পারে, যারা মুখে নিজেদের মুসলিম দাবী করলেও অন্তরে এখনো ঈমান প্রবেশ করেনি। আর এই ধরনের লোকদের জন্য আখিরাতে যে ভয়ানক আজাব অপেক্ষা করছে তা তো আমাদের কল্পনারও বাইরে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এসকল মন্দ কাজ হতে হেফাজত করুন।
--
তবে এক্ষেত্রে অনেকে আবার ভ্রান্তির শিকার হন, অন্যদের বিরুদ্ধে তো তারা ঠিকই জবান এবং কলম চালান, অথচ নিজ পছন্দের ব্যাক্তি ও দলের কুরআন হাদীস বিরোধী বক্তব্য ও স্পষ্ট ভুলের ব্যাপারে আলোচনা করলে সেটাকে গীবত মনে করেন। সেসকল ভাইদের জেনে রাখা দরকার যে, সব ধরণের দোষ বর্ণনা গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয়। উলামায়ে কেরাম এই ব্যাপারে বিশদ আলোচনা করেছেন। নির্ভরযোগ্য আলেমদের থেকে এই ব্যাপারে জেনে নেয়া কাম্য।
04 অক্টোবর করেছেন তামিম আল আদনানী
...