মুমিন মুসলমান ও মুসলমানের মধ্যে তেমন কোনো ধরনের পার্থক্য নেই। এটা শুধু আমাদের সমাজের একটি প্রচলিত ব্যবহার। তবে, মুমিন ও মুসলিম এ দুটির মধ্যে মৌলিক দৃষ্টিগত পার্থক্য আছে। মুমিন শব্দটি এসেছে মূলত ইমান শব্দ থেকে। ইমানের যে দাবি আছে, সেগুলো যিনি পরিপূর্ণরূপে পালন করবেন, তিনি হলেন মুমিন। আর মুসলিম শব্দ এসেছে ইসলাম শব্দ থেকে। ইসলামের দাবিগুলো যিনি পূরণ করবেন, তিনি হলেন মুসলিম।
যদি আমরা নবী করিম (সা.)-এর হাদিস দেখি, তাহলে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে ইসলামের পরিচয় রাসুল (সা.) কীভাবে করেছেন। ইসলামের পাঁচটি মৌলিক ভিত্তির ওপর রাসুল (সা.) ইসলামের পরিচয় করে দিয়েছেন। ইসলামের এই পাঁচটি আরকান যে ব্যক্তি নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করবেন, তিনি হচ্ছেন মুসলিম। এই কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে, যদি তিনি নিজেকে মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করতে চান।
এর দ্বিতীয় ধাপটি হলো ইমানের ধাপ। বান্দা যখন বাহ্যিকভাবে, প্রকাশ্যে এবং অপ্রকাশ্যে, অন্তরে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সবকিছুর মাধ্যমে যখন ইসলামকে নিজের দ্বীন হিসেবে মেনে নেবে, তখন তিনি ইমানকে তাহকিক (তাহকিক ও তাকীদ অর্থ হচ্ছে ক্রিয়াটি বাস্তবে ঘটেছে, এ কথা নিশ্চিত করা) করবেন। ইমানের যে ছয়টি রোকন বা স্তম্ভ আছে, সেগুলো পরিপূর্ণরূপে মেনে নিতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে, কাজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এর বিপরীতে কোনো কাজ করতে পারবে না। এগুলো সব নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার নামই হলো মুমিন। এর সামান্যতম একটি অংশ অবমাননা করলে তিনি মুসলিম হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন; কিন্তু ইমানের গণ্ডিতে তিনি আসতে পারবেন না।
ইসলাম ও ইমানের মৌলিক দাবি পূরণ করার পরও বান্দা আল্লাহর যত অধিকার রয়েছে, সেগুলো নিজের জীবনে প্রত্যেকটি পর্যায়ে পালন করবে এবং পরিপূর্ণরূপে নিজেকে আত্মসমর্পণ করবে।