169 বার প্রদর্শিত
"ধর্ম ও বিশ্বাস" বিভাগে করেছেন Level 5

1 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন Level 6
জুলকারনাইন কুরআনে উল্লিখিত একজন ব্যক্তি। কুরআনের সূরা কাহাফ্ এ জুলকারনাইন নামটি উল্লিখিত আছে। কুরআনের তাফসিরকারীদের কারো কারো মতে তিনি একজন নবী ছিলেন। অন্যপক্ষে ইসলামী পণ্ডিতদের কেউ কেউ মনে করেন কুরআনে বর্ণিত জুলকারনাইন হলেন আলেকজান্ডার। স্মর্তব্য কুরআনে আলেকজান্ডার নামটি সরাসরি উল্লিখিত নেই। প্রাচীনকালে আরব উপদ্বীপে জুলকারনাইন নামটি পরিচিত ছিল অল্প বয়সী উচ্চ ক্ষমতাধর একজন শাসক হিসেবে। জুলকারনইন শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল দুই শিং বিশিষ্ট।কুরআন শরীফের সূরা কাহাফের আয়াত নম্বর ৮৩-১০১ অংশে জুলকারনাইন সম্পর্কিত বর্ণনা আছে। নবী হিসেবে জুলকারনাইনের নাম উল্লেখ নেই যদিও কিন্তু তিনি নবী ছিলেন না এমনটিও বলা হয়নি। বলা হয়েছে যে আল্লাহ তাকে সকল বিষয়ে পথনির্দেশ বা দিকনির্দেশ কার্যপোকরণ দিয়েছেন। তিনি দুটি পথ অনুসরণ করেন। তার মধ্যে এক পথে গিয়ে তিনি ইয়াজুজ মাজুজের হাতে অত্যাচারিত এক জাতির দেখা পান। তিনি তাদের জন্য গলিত তামার তৈরি একটি প্রাচীর বানিয়ে দেন। সূরা কাহাফ ৮৩-৮৬ নম্বর আয়াতে নিম্নরূপ বর্ণিত আছেঃ

তারা আপনাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুনঃ আমি তোমাদের কাছে তার কিছু অবস্থা বর্ণনা করব।

আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম। অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন।অবশেষে তিনি যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।”

জুলকারনইন পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়াতেন নির্যাতীত, বঞ্চিত, শাসকের হাতে শোসিত লোকদের মুক্তি দিতেন। কুরআনের বর্ননা অনুযায়ী অরুণাচলে, যেখান থেকে সূর্য উদিত হয় সেখানে ইয়াজুজ, মাজুজের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার জন্য দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন জুলকারণাইন। আর সে স্থানটি পাহাড়ের প্রাচীরের মাঝখানে। সূরা কাহাফের ৯৩ হতে ৯৮ নম্বর আয়াতে জুলকারনাইনের এই প্রাচীর নির্মাণের উল্লেখ আছে। ধারণা করা হয় এই জাতি ধাতুর ব্যবহার জানতো। তারা হাপর বা ফুঁক নল দ্বারা বায়ু প্রবাহ চালনা করে ধাতুকে উত্তপ্ত করে গলাতে পারতো এবং তারা লোহার পিন্ড ও গলিত সীসাও তৈরি করতে পারতো। পরবর্তী আয়াতের বিভিন্ন বাংলা অনুবাদে গলিত তামার উল্লেখ আছে; ইংরেজি অনুবাদে তামার স্থলে সীসার উল্লেখ আছে। জুলকারনাইন তাদের প্রতিরোধ প্রাচীর তৈরি করার জন্য উপাদান ও শ্রম সরবরাহ করতে বললেন। তারা নিজেরাই জুলইয়াজুজ মাজুজ জাতি কে বাইবেলে গগ ম্যাগগ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।কারনাইনের আদেশ মত দুই পর্বতের মাঝে শক্ত লোহার প্রাচীর বা দ্বার তৈরি করলো।আধুনিক যুগের গবেষক ও পন্ডিতদের মতে কুরআনে উল্লিখিত জুলকারনাইনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক সম্ভাব্য ৩ টি চরিত্র নির্দেশ করা হতে পারে , যারা হলেনঃ

১।মহামতি আলেকজান্ডার

২।সাইরাস দি গ্রেট

৩।হিমায়ার সাম্রাজ্যের একজন শাসক।

আল কাহফ মুসলীম ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১৮ নম্বর সূরা এর আয়াত সংখ্যা ১১০ টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১১ টি। আল কাহফ সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরায় কোরাইশদের তিনটি প্রশ্নের কথা এবং প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। এই সূরায় হযরত মুসা (আঃ) এবং হযরত খিযির (আঃ) এর ঘটনাটিও বর্ণনা করা হয়েছে।

মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী এবং মুসনাদে আহমদে হযরত আবুদ্দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি সূরা কাহ্‌ফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করে সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে নিরাপদ থাকবে। মুসনাদে আহমদে হযরত সাহ্‌ল ইবনে মু’আযের রেওয়ায়েতে আছে যে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম এবং শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার জন্যে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সূরা পাঠ করে তার জন্যে যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়।

রূহুল-মা’আনীতে হযরত আনাস (রাঃ) -এর বর্ণিত রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেনঃ সূরা কাহফ সম্পূর্ণটুকু এক সময় নাযিল হয়েছে এবং সত্তর হাজার ফেরেশতা এর সঙ্গে আগমন করেছেন। এতে এর মাহাত্ম্য প্রকাশ পায়।
করেছেন Level 7
সুন্দর উত্তর!!

এ সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন খুঁজে পাওয়া গেল না

নির্বিক এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে আপনি আপনার প্রশ্ন করে উত্তর জেনে নিতে পারবেন এবং পাশাপাশি অন্য কারো প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে তাদের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবেন।
...