১. আনতে হবেই চাঁদ..
ইসমাঈল হোসেন দিনাজী
ঈদের খুশি কোথায় গেল কোথায় ঈদের চাঁদ
চতুর্দিকে ছড়িয়ে যেন ক্লান্তি অবসাদ।
দখিন হাওয়ায় বেসুর বাজে গায় না পাখি গান
নিঝুম কালো দীঘল রাতের হয় না অবসান।
জালিমশাহির কয়েদখানায় ঈদের হেলাল বন্দী
কালোর সঙ্গে আলোর কভু হয় না তো ভাই সন্ধি।
আঁধার এবং আলোর মাঝে চলছে তুমুল যুদ্ধ,
চাঁদ-সেতারা কার ইশারায় বিনা দোষেই রুদ্ধ?
গোমড়ামুখো আকাশকোণে মেঘের আনাগোনা
পায় না খুঁজে ঈদের খুশি নতুন চাঁদের সোনা।
নতুন জামা নতুন টুপি আতর আতর গন্ধ
সবই আছে তবু যেন স্তব্ধ খুশির ছন্দ!
ঈদের খুশি উড়ছে দেখ প্রজাপতির ডানায়
ঈদগাহে আজ খুশির মেলা চাঁদ ছাড়া কি মানায়?
খুশির দিনে সবার মাঝে চাঁদটা নেমে আসুক
সবকে ভালোবাসুক সকল দুঃখজ্বরা নাশুক।
ভাঙতে হবে জেলের তালা আনতে হবেই চাঁদ
চলতে পথে দলতে হবেই পাহাড় সমান বাঁধ।
২. ঈদের চাঁদ
মনিরুলহাসান
মা, বাবা আর চাচা, ফুফু
এবং খালা, মামায়,
সন্ধ্যা হওয়ার শুরু থেকেই
খুঁজছে কেবল আমায়।
মন্ত্রী, নেতা, পুলিশ, ডাকাত,
চোর, ভিক্ষুক, মুচি-
সবাই মিলে আমায় শুধু
করছে খোঁজাখুঁজি।
ধনী, গরীব নেই ব্যবধান
খুঁজছে আমায় সব,
কোথাও কী কেউ দেখলো
আমায় ছুটছে কলরব।
চাইছে না কেউ আসতে কাছে
কিংবা ছুঁতে গায়ে,
আমায় কেবল খুঁজছে শুধু
শহর এবং গাঁয়ে।
রাজধানীরই মানুষ যারা
কিংবা কোনো চাষী,
দেখলে আমায় ফুটবে জানি
সবার মুখেই হাসি।
ছোট বড় সবার মনে
আমায় দেখার সাধ,
মেঘের পিছে লুকিয়ে আছি
আমি ঈদের চাঁদ।
৩. লাল ফিতারই সাজ
জয়নুল আবেদীন আজাদ
রমজানের ঐ রোজার শেষে
চাঁদ-তারকার উজল বেশে
আসলো আবার ঈদ,
ঈদ যে খুকুর পরম মিতা
সাজতে যে চাই জরিন ফিতা
তাই ধরেছে জিদ।
জিদের পোশাক নয়তো ভালো
মন হয়ে যায় অনেক কালো
মা বলেছেন আজ,
তাইতো খুকু মিষ্টি হেসে
মেনে নিল অবশেষে
লাল ফিতারই সাজ।
৪. রাত পোহালে ঈদ
আসাদ বিন হাফিজ..
রাত পোহালে ঈদ
তাড়াও চোখের নিঁদ
খুশির ছটা বুকে নিয়ে
দূর করে দাও জিদ।
আজকে বাসো ভালো
তাড়াও মনের কালো
মিষ্টি চাঁদের হাসি দেখে
হৃদয় করো আলো।
নিজকে নিজে গড়ো
বিশ্বটাকে পড়ো
ঈদের খুশির খুশবু মেখে
হৃদয় করো বড়ো।
৫. জন্মভূমির ঈদ
ফারুক নওয়াজ
সূর্য বিলায় আলো আমায়, আঁধার ঘোচে তাতে
স্নিগ্ধ-কোমল চাঁদের আলোয় মনটা নাচে রাতে।
ঝিকমিকানো জোনাকজ্বলা, ঝিনিক ঝিনিক ঝিঁঝিঁ
ঘুম এনে দেয়, স্বপ্নে আমি ঝুমদেয়াতে ভিজি।
ভোরটি হলে পাখির গানে দোরটি খুলে দাঁড়াই-
সবুজ মাঠের হাতছানিতে হাত দু’খানা বাড়াই।
মনটা তখন যায় হারিয়ে মানতে নারাজ মানা
পাখির মতো মনের তখন যায় গজিয়ে ডানা।
মাঠ পেরিয়ে নীলচে পাহাড়, মেঘ ছুঁয়েছে চূড়ো
ঠিক মনে হয় পাহাড় তো নয় আদ্যিকালের বুড়ো।
ডাক শোনা যায় নীল সাগরের, ঢেউরা ওঠে ফুলে
নোনতা পানির গন্ধ ভাসে হাওয়ায় দুলে দুলে।
এই তো আমার দেশরে আহা! মায়ায় মায়ায় মাখা
শীতল মাটির প্রাণের ছোঁয়া ছায়ায় ছায়ায় আঁকা।
ভাইবোনেরা মিলেমিশেই এই মাটিতে থাকি-
রাতটি এলে ঘুমিয়ে চোখে স্বপ্ন ধরে রাখি।
হাসিখুশির, স্বপ্ন দেখার প্রিয় স্বদেশভূমি-
বছর শেষে ঈদের খুশির বার্তা আনো তুমি।
সেই খুশিতে সবাই মাতি হারাই মনে-মনে
প্রজাপতির দুলদুলুনি ফুলের বনে বনে।
সবাই এদিন এক হয়ে যাই, কেউ থাকি না দু’টি!
লক্ষ গোলাপ সবাই তখন একটি বোঁটায় ফুটি।
৬. ঈদের খুশি
নাসির হেলাল
রাত থম্ থম্ রাতের শেষে সকাল যখন হবে
মনের মাঝে ঈদের খুশি জমাট বেঁধে রবে।
ঈদের খুশি ঈদের খুশি বাঁকা চাঁদের হাসি
ফিরনি কাবাব পায়েস সেমাই দেব রাশি রাশি।
ঈদের খুশি সকাল বিকাল ঈদের খুশি রাতে
নতুন জামা নতুন কাপড় পরবো সবাই প্রাতে।
ঈদের খুশি বাড়ি বাড়ি ঈদের খুশি মাঠে
ঈদের খুশি শহর গঞ্জে ঈদের খুশি হাটে।
ঈদের খুশি ছেলে বুড়োর ঈদের খুশি নানার
ঈদের খুশি গরিব দুঃখীর দুঃখ কথা জানার।
ঈদের খুশি উদার আকাশ ঈদের খুশি দানের
ঈদের খুশি দু’হাত ভরে উচ্ছল যত প্রাণের।
উৎস: কিশোর কন্ঠ ও প্রজন্ম ফোরাম।