প্রথমে একটি হাদিস দেখি: যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে মুহাব্বত করল সে যেন আমাকেই মুহাব্বত করল। আর যে আমাকে মুহাব্বত করল সে আমার সাথে জান্নাতে বসবাস করবে। (তিরমিযী শরীফ, মেশকাত- পৃ: ৩০) দাঁড়ির হুকুম ও পরিমাপ: ইসলামী শরীয়তে একমুষ্টি পরমান লম্বা দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব বা আবশ্যক। দাঁড়ি এক মুষ্টির কম রাখা বা একেবারে তা মুন্ডিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে হারাম এবং কবীরা গুনাহ। স্বয়ং হুজুর স. এর দাঁড়ি রাখা এবং তার অসংখ্য হাদীসে উম্মতের প্রতি দাঁড়ি রাখার সাধারণ নির্দেশই প্রমান করে যে, দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব এবং না রাখা হারাম। কারন, শরীয়ত প্রবর্তক কর্তৃক কোন বিষয়ের প্রতি সাধারন নির্দেশ হলে তা পালন করা ওয়াজিব এবং বিপরীত করা হারাম হয়ে যায়। আরে এটা ফিক্বাহ শাস্ত্রের একটি মূলনীতিও বটে। এছাড়া সাহাবা, সালফে সালেহীন এবং ফুক্বাহাগণের দাঁড়ি রাখার নিরবচ্ছিন্ন আমল এবং তাদের বিভিন্ন উক্তিসমূহের দ্বারাও এক মুষ্টি পরিমাপ লম্বা দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব এবং এর বিপরীত করা হারাম প্রমাণিত হয়। নিম্নে দাঁড়ি সম্পর্কিত কতিপয় হাদীস, সাহাবাগণের আমল ও ফুক্বাহাগণের উক্তিসমূহ উল্লেখ করা হল: হাদীস শরীফে দাঁড়ি: ১. হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূল স. ইরশাদ করেছেন, দশটি বিষয় সকল নবী রাসূলগণের সুন্নাত। তন্মধ্যে গোঁফ ছোট করা এবং দাঁড়ি লম্বা করা অন্যতম। (মুসলিম শরীফ,১/১২৯) ২. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স. ইরশাদ করেছেন, তোমরা গোঁফ কাট এবং দাঁড়ি লম্বা কর, আর অগ্নিপূজকদের বিরোধিতা কর। (মুসলিম শরীফ,১/১২৯) ৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল স. ইরশাদ করেন, মুশরিকদের বিরোধিতরা কর, দাঁড়ি লম্বা কর, আর গোঁফ ছোট কর। (বুখারী শরীফ- ২/৮৭৫, মুসলিম) ৪. হুজুর স. বলেছেন যে, তোমরা ভালভাবে গোঁফ কাট এবং দাড়ি বাড়াও। (বুখারী শরীফ) ৫. হুজুর স. এরশাদ করেন যে, গোঁফ কাট এবং দাড়ি ছড়িয়ে রাখ। (কাজী এয়াজ শরহে মুসলিম নববী) ৬. হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম স. ইরশাদ করেন, দাড়ি বাড়াও , গোঁফ কাট এবং এ ক্ষেত্রে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের সাদৃশ্য অবলম্বন করোনা। (মাসনাদে আহমদ) ৭. নবী করীম স. এর আমল দ্বারাও দাড়ি প্রমান পাওয়া যায়। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, সাহাবী হযরত খাব্বাব রা.-কে কেউ জিজ্ঞেস করেন, হুজুর পাক স. কি জোহর ও আছর নামাযে কেরআত পাঠ করতেন? তিনি বলেন, হ্যা, পাঠ করতেন। লোকটি পুন:প্রশ্ন করেন, আপনি কিভাবে তা বুঝতেন ? তিনি বলেন হুজুর স.-এর দাড়ি মুবারকের দোলায় আমরা বুঝতাম যে, তিনি কিরআত পাঠ করছেন। (তাহাবী শরীফ) বলাবাহুল্য, কেরআত পাঠকালে ঐ দাড়ি দোলাই পরিদৃষ্ট হবে, যা যথেষ্ট দীর্ঘ হয়, ছোট ছোট দাড়ি কখনো দুলবে না।