নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) ধারা ৯-এর ১-এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যদি কোনো পুরুষ বিবাহবন্ধন ছাড়া ১৬ বছরের অধিক বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলক ভাবে তার সম্মতি আদায় করে অথবা ১৬ বছরের কম বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহলে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে।
ধর্ষণকারীর জরিমানা ও শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী-২০০৩)-এর ধারা ৯-তে বলা হয়েছে:
১. যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
২. যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা ওই ধর্ষণ-পরবর্তী তার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
৩. যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে ওই নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহলে ওই দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
৪. যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া যদি কেউ ধর্ষণের চেষ্টা করেন তাহলে ওই ব্যক্তি অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
৫. যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন কোনো নারী ধর্ষিত হন, তাহলে যাদের হেফাজতে থাকাকালীন ওই রূপ ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা ধর্ষিত নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরি দায়ী ছিলেন, তিনি বা তারা প্রত্যেকে ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হলে হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য অনধিক ১০ বছরের কিন্তু অনূ্যন পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
আইনের প্রয়োগ:
ইলেকট্রিক বা প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায়: ধর্ষণকারী বা কারীরা নিজে প্রভাবশালী বা সম্পদশালী হলে, কিংবা তার অভিবাবক অথবা কোন আত্মীয়-স্বজন প্রভাশালী, ক্ষমতাধর, রাজনীতিবিদ হলে আইন যথাযথ ভাবে প্রয়োগ হতে দেখা যায় না।
আবার ধর্ষণের শিকার মেয়ে বা নারী গরীব হলে, তার অভিবাবক নিরীহ হলেও তারা যথাযথ বিচার পায় না। এমন কি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়- বিচার প্রার্থী্কে দ্বিতীয় বার ধর্ষণের শিকার হতে দেখা যায়।