যৌন চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ভুল ধারণা হচ্ছে যে, লিঙ্গ যত বড় হবে যৌন তৃপ্তি তত বেশি হবে; এবং সেই ধারণা থেকেই আমাদের সমাজে পুরুষরা সাধারণত লিঙ্গ বর্ধিত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতিতে হন্ন হয়ে পড়ে, বিশেষত যাদের লিঙ্গ স্বাভাবিকের চেয়ে একটু ছোট। তবে বর্তমানকালে লিঙ্গ বর্ধিত করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত পদ্ধতি এবং বিজ্ঞাপন সমাজে এবং মিডিয়ায় পাওয়া যায় তা কতটা বাস্তবসম্মত ও ফলপ্রসু সেই বিষয় নিয়েই এখন আলোচনা করা হবে।
পেনিস এক্সটেন্ডার টুল: যারা পেনিস ইনলারজমেন্ট বিষয়ে অনলাইনে সার্স দিয়েছেন তারা এ বিষয়ে জানেন।
এর পক্ষে যে সব ব্যাখ্যা আছে তা হল-
১.এটি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কোষের গতিশীলতাকে বৃদ্ধি করে কোষগুলোকে দূরে অবস্থান করে নিজেদের আকৃতি বৃদ্ধি করে লিঙ্গকে স্থায়ীভাবে বর্ধিত করবে বলে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
২.এটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি নির্ভর তাই এর ফলাফল কৃত্রিম মেডিসিন প্রয়োগের ফলের মতো সাময়িক না হয়ে স্থায়ী হবে বলে ব্যাখ্যা করা হয়।
৩.মায়ানমারে 'কায়া' নামক একটি নৃগোষ্ঠী আছে যারা তাদের মেয়েদের গলায় একটি নির্দিষ্ট বয়সে স্প্রিং লাগিয়ে দেয় যা দীর্ঘদিন তারা ব্যবহার করে এবং এতে করে তাদের নারীদের গলা হাসের গলার মতো লম্বা হয়ে যায়। তাদের এই হাসের মতো লম্বা গলা সেই নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও বিশেষত্ব হিসেবে তারা পরিগণিত করে এর জন্য গর্ববোধ করে। এই বাস্তব উদাহরণটি পেনিস এক্সটেন্ডার টুলের ক্ষেত্রেও একই রকম ফল দিবে বলে এক্সটেন্ডার টুলস কোম্পানিগুলো ব্যাখ্যা করে।
এসব ব্যাখ্যা শুনে অনেকেই বিদেশ থেকে উচ্চদামে এটি কিনে আনতে বা অনলাইনে অর্ডার করতে হন্ন হয়ে পড়ে কারণ বাংলাদেশে সেক্সটয় বা এসব প্রডাক্ট বিক্রি করা অনুমোদিত নয়।
আসলেই কি এটি ফলপ্রসু?
অনেক তত্ত্ব ও ভিডিওসহ ব্যাখ্যা থাকলেও এটি ফলপ্রসু নয়। এর উদ্দেশ্যই হলো মনোমুগ্ধকর ব্যাখ্যা শুনিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করে এই প্রডাক্ট উচ্চদামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া। এটি ফলপ্রসু হয় না কারণ:
১.লিঙ্গ তো আর গলার মতো স্থির অঙ্গ নয়, এটি কখনও ইরেক্ট হয়ে স্থুল হয় আবার শিথিল হলে স্থিমিত হয়; লিঙ্গ স্থুল হওয়া অবস্থায় এটি লাগালে পরে লিঙ্গ স্থিমিত হয়ে গেলে তা খুলে পড়ে।
২.এটি কিছুটা স্থান দখল করে তাই এটি লাগিয়ে প্যান্ট পড়ে বাহিরে হাটাচলা করা যায় না।
তাই ব্যাখ্যাটি বিজ্ঞনসম্মত হলেও এটি বাস্তবে প্রয়োগ করা যায় না।
অন্যান্য পদ্ধতিসমূহ:
VigRX, MAN Up, prosolution, X Man Power ইত্যাদি পিল ও মেডিসিন পেনিস এক্সটেন্ডার সাপ্লিমেন্ট হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। এসবের ব্যাখ্যা হচ্ছে এসব মেডিসিন যৌনতন্ত্রের কোষকে সাপ্লিমেন্ট ভিটামিন ও হরমোন সরবরাহ করে যৌনাঙ্গকে সজীব ও প্রাণবন্ত করে তোলে এবং এই প্রকৃয়ায় লিঙ্গ বর্ধিত হয়। এই ব্যাখ্যা শুনে মানুষ সহজেই আস্থা অর্জন করে তা প্রয়োগ করে কিন্তু আশানুরূপ ফল পায় না। কারণ, এসব মেডিসিন একটি সাময়িক সজীবতা সৃষ্টি করে যা কোন মেডিসিনের ক্ষেত্রে ২৪ ঘন্টা আবার কোনটার ক্ষেত্রে ৭ দিন বা তার বেশি ফল দেয়; আবার ক্রমাগত সেবনের ফলে লিঙ্গকে কিছুদিন বা কয়েক বছর সময় সজীব রাখে। তবে এই পদ্ধতি এপ্লাই করার পর তা ছেড়ে দিলে মেডিসিন ব্যবহারের পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক সজীবতাও ব্যাহত হয়; আবার দীর্ঘদিন এসব ব্যবহারের ফলে এসব মেডিসিনও এক সময় তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
তাহলে সমাধান কি?
লিঙ্গ বর্ধিত করা যেহেতু একটি আশানুরূপ ফলপ্রসু পদ্ধতি নয় তাই যৌন চাহিদা পূরনের ক্ষেত্রে অন্যসব পদ্ধতি এপ্লাই করুন; কোনো যৌনরোগ থাকলে তার চিকিৎসা নিন। কিছু পাচ্ছি না এমন খুঁতখুঁতে মানসিকতা ছেড়ে দিন এবং যা পাচ্ছেন তাকেই সুন্দর মনে করুন। আর অবিবাহিতরা মানসিকভাবে গবেষণা করে এমন একজনকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে খুঁজে নিন যার খুঁতখুঁতে স্বভাব নেই এবং স্বভাবিক প্রাপ্তি পেলেই সন্তুষ্ট থাকবে। মিলনের সময় ভালোবাসা এবং স্বস্তি নিয়ে মিলন করুন।
লেখক ও গবেষক:
মোঃ মেহেদী হাসান,
Father of
Method of Creative Adaptation System MCAS.