এই পৃথীবিতে কেউ সঙ্গে করে সব কিছু নিয়ে আসে না। দুনিয়াতে বসেই অনেক সংগ্রাম করে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হয়ে। আর এই সংগ্রামে সবাই সফলও হয় না। পৃথিবীর বুকে আজও এমন কিছু মানুষ আছেন যারা পথের ভিখারি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী হয়ে গিয়েছেন এক কথায় বলতে গেলে বলতে হবে zero থেকে hero! এমন কিছু মানুষ যারা শূন্য থেকে বিলিওনিয়ার হয়েছেন।
পথের ভিখারি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী - শূন্য থেকে পূর্ণ, zero থেকে hero!
পথের ভিখারি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী - শূন্য থেকে পূর্ণ, zero থেকে hero!আমেরিকার সেরা ৪০০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস (Forbes Magazine)। তাদের প্রকিাশিত এ তালিকায় এমন ধনীরা আছেন যারা শূন্য থেকে পূর্ণ হয়েছেন অথবা বলা যেতে পারে zero থেকে hero। এরা আমেরিকার সেইসব মানুষ যারা স্বপ্নকে শুধু বুকে লালনই করেন না, একে বাস্তবায়িত করে নিজে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান। তারা আজ বিশ্বে সেরা ধনীদের তালিকাতেও রয়েছেন।
এমনই কয়েকজন বিলিওনিয়ারের কথা যারা পথের ভিখারি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনীঃ
১. হোয়াটসঅ্যাপ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও জান কোম অতি নগণ্য চাকরি করতেন। ইউক্রেন থেকে তিনি আমেরিকা আসেন। ৭.৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের হোয়াটস অ্যাপের কল্যাণে আজ তিনি বিলিওনিয়ার।
২. ১৯৯৯ সালে অনলাইন স্টোর আলিবাবা প্রতিষ্ঠার আগে জ্যাক মা ছিলেন একজন সামান্য ইংরেজির শিক্ষক। ১৯৯৫ সালে প্রথম আমেরিকায় এসে প্রথম ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সেখান থেকেই আলিবাবার উত্থান যা আমাজনের দ্বিগুণ পরিমাণ মার্চেন্ডাইজ করে। এর মূল্য ২০.২ বিলিয়ন ডলার ব্যবসা করেন তিনি।
পথের ভিখারি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী - শূন্য থেকে পূর্ণ, zero থেকে hero!
অনলাইন স্টোর আলিবাবার প্রতিষ্ঠা জ্যাক মা
৩. এক ফোঁটা রক্ত থেকে দেহের যাবতীয় তথ্য বের করার পদ্ধতি আবিষ্কারের পর এই নারী বিলিওনিয়ার হয়েছেন। তার ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের থেরানস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন।
৪. সুইডেনের একটি ফার্মে বড় হয়েছেন ইনগভার। পেন্সিল, গ্রিটিং কার্ড ইত্যাদি তৈরি শুরু করেন এবং এটিই আজ ৩.৯ বিলিয়ন ডলারের আইকেইএ কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।
৫. দরিদ্রদের জন্য তৈরি একটি বাড়িতে থাকতেন স্টারবাক্সের মালিক হাওয়ার্ড শালচজ। নানা টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছেন তিনি। ইউনিভার্সিটি অব নর্দান মিশিগান-এ একটি ফুটবল স্কলারশিপ পান। সেখানেই একটি কফিশপ দেন যার নাম স্টারবাক্স যাউ, এখন ২.১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে গোটা দুনিয়ায় এর ১৬ শাখা রয়েছে তার গড়া এ প্রতিষ্ঠানটির।
৬. গরীব ঘরে জন্ম নিয়ে অপরাহ উইনফ্রে প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান টিভি করেসপন্ডেন্ট হন তার জন্মস্থান নাশভিলে। তার ‘অপরাহ উইনফ্রে শো’ এর মাধ্যমে আজ তিনি ৩ বিলিয়ন ডলারের মালিক।
৭. আমেরিকা গিয়ে বাসন মাজতেন পাকিস্তানের শাহীদ খান। সেখান থেকেই তিনি ফ্লেক্স-এন-গেট এর মালিক হয়েছেন যার মূল্য ৪.৪ বিলিয়ন ডলার।
৮. পরিবার চালাতে ১০ বছর বয়সে ক্রিসমাস কার্ড বিক্রি করতেন জন পল ডি জোরিয়া। একবার ৭০০ ডলার ঋণ করে তিনি চুলের যতেœ শ্যাম্পু বানিয়ে তা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিক্রি করতেন। আজ তিনি ৩.২ বিলিয়ন ডলারের জন পল মিচেল সিস্টেম এবং প্যাট্রন টাকিলার মালিক।
৯. একটি গ্যাস স্টেশনের তত্ত্ববধায়ক হিসেবে কাজ করতেন ডো ওন। কোরিয়া থেকে ১৯৮১ সালে আমেরিকায় আসার ৩ বছর পর একটি কাপড়ের দোকান দেন যার নাম ‘ফরএভার ২১’। এটি আজ ৫.২ বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান।
১০. ব্রুক ব্রাদারস-এ একজন ক্লার্ক হিসেবে কাজ করতেন রালফ লরেন। ১৯৬৭ সালে তিনি পুরুষদের পোশাকে টাই-কে সংযুক্ত করেন। আজে তিনি ৭.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘পোলো’র মালিক।
১১. বিধবা মা তার পাঁচ ছেলের একজনকে অনাথ আশ্রমে পাঠিয়ে দেন। ছেলেটির নাম ছিলো লিওনার্দো দেল ভেচিও। একটি মোল্ডিং কারখানায় কাজ করার সময় হাতের একটি আঙ্গুল খোয়ান। তেইশ বছর বয়সে নিজের মোল্ডিং শপ খোলেন যা আজ ১৮.৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ।
১২. নাৎসিরা হাঙ্গেরি দখল দিলে সেখান থেকে পালিয়ে লন্ডনে আসেন জর্জ সোরোস। নিউ ইয়র্কের একটি ব্যাংকে চাকুরি জুটিয়ে নেন তিনি। ১৯৯২ সালে ব্রিটিশ পাউন্ডের বিপরীতে তার বিখ্যাত বেট আজ তাকে ২৪ বিলিয়ন ডলারের মালিক বানিয়ে দিয়েছে।
১৩. মা মারা যাওয়ার পর খালার কাছে বড় হয়েছেন ল্যারি এলিসন। ১৯৭৭ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন তার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান ওরাকল। আজ তিনি ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক।
১৪. ১৮ মাস বয়সে মা মারা যাওয়ার পর অনাথ হয়ে বড় হয়েছেন রোমান আব্রাহামোভিচ। কলেজে পড়ার সময় তিনি তেল সংশ্লিষ্ট পণ্য পাঠাতেন সাইবেরিয়ায়। ১৯৯২ সালে তার জীবনে পরিবর্তন আসে যখন রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী টাইকুন বোরিস বেরেজোভস্কির সুনজরে পড়েন তিনি। মামলা-মোকদ্দমায় পড়ে ব্রিটেন পালিয়ে যান বোরিস এবং তার বিশাল ব্যবসা সাম্রাজ্যের অধিপতি হন আব্রাহামোভিচ। আজ তিনি ৯.৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে রাশিয়ার সেরা ধনীদের একজন। আজ তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইয়ট, একটি বোয়িং ৭৬৭ এবং চেলসি ফুটবল ক্লাবের মালিক।