শরীয়তের দুটি দিক। দার্শনিক ও প্রায়োগিক। সহীহ ইলম শরীয়তের দর্শনকে সংরক্ষণ করে, আর সহীহ জি’হা’দ শরীয়তের প্রয়োগকে নিশ্চিত করে। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ইলম ও জি’হা’দ এমন দুটি জমজ, যা কখনো বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। বিচ্ছিন্ন হলে দুটিই কার্যক্ষমতা হারায় এবং বিপথগামী হয়। একারণেই আল্লাহ তায়ালা রাসূল প্রেরণের সঙ্গে যেমন কিতাব নাযিল করেছেন, তেমনি জি’হা’দ ও কি’তা’লের জন্য ‘হাদীদ’ (লোহা)ও নাযিল করেছেন।
.
{لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنْزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيزَانَ لِيَقُومَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ وَأَنْزَلْنَا الْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ وَرُسُلَهُ بِالْغَيْبِ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ } [الحديد: 25]
“নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদণ্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি আরো নাযিল করেছি লোহা, তাতে প্রচণ্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে। আর যাতে আল্লাহ জেনে নিতে পারেন, কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। অবশ্যই আল্লাহ মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।” –সূরা হাদীদ: ২৫
.
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
وأما العلم بالكتاب والحكمة ..... فالجهاد سنام الدين وفرعه وتمامه، وهذا أصله وأساسه وعموده. -مجموع الفتاوى: 15/ 390
“.... জি’হা’দ হলো দ্বীনের চূড়া ও পূর্ণতা, আর ইলম হলো দ্বীনের ভিত্তি ও স্তম্ভ।” -মাজমুউল ফাতাওয়া: ১৫/৩৯০
.
আল্লামা ইবনে আবেদীন শামি রহ. বলেন,
فإن قيام الدين بالجهاد والعلم -الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (6/ 403)
“শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা লাভ করে জি’হা’দ ও ইলমের মাধ্যমে।”
দুঃখজনক সত্য হলো, আজ আমরা দুটিকে আলাদা করে ফেলেছি। অনেককে তো দুটিকে বিপরীতমুখী ও সংঘর্ষিকরূপে দাঁড় করাতেও দেখা যায়!