কথা বলা ও প্রচার করা: কোরআন সুন্নাহ’র কয়েকটি নির্দেশনা
.
১. আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন-
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ (16) إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ (17) مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ (18). سورة ق
“আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয়, তা আমি জানি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী অপেক্ষাও নিকটতর। মনে রেখ! দুই গ্রহণকারী ফিরেশতা তার ডানে ও বামে বসে তার কর্ম লিপিবদ্ধ করে। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।” সূরা ক্বাফ: ১৬-১৮
.
সুতরাং যে কোনো কথা বলা, লিখা ও প্রচার করার পূর্বে আমার মনে রাখতে হবে, এক একটি কথার জন্য আমাকে কেয়ামতের ভয়াবহ দিনে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করতে হবে। যা বলছি, লিখছি বা প্রচার করছি, তার জন্য কি মহামহিম পরাক্রমশালী রবের সামনে জবাবদিহি করতে পারব সেদিন?
কথা বলা ও প্রচার করা: কোরআন সুন্নাহ’র কয়েকটি নির্দেশনা
.
২. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليقل خيرا أو ليصمت. متفق عليه
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই ভালো কথা বলে, অন্যথায় চুপ থাকে।” -মুত্তাফাকুন আলাইহি
.
সুতরাং আমি যদি ঈমানদার হই, প্রতিটি কথা বলা ও লিখার আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি, কথাটি ভালো, না মন্দ?
কথা বলা ও প্রচার করা: কোরআন সুন্নাহ’র কয়েকটি নির্দেশনা
.
৩. আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ (6). الحجرات
“হে মুমিনগণ! যদি কোনো ফাসেক তোমাদের নিকট কোনো বার্তা নিয়ে আসে, তোমরা তা যাচাই করে দেখ; পাছে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি না করে বস এবং ফলে নিজেদের কৃতককর্মের জন্য তোমাদেরকে অনুতপ্ত হতে হয়।। -সূরা হুজুরাত: ৬
.
সুতরাং যে কথার সত্যতা আমি নিশ্চিত নই তার উপর ভিত্তি করে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা জায়েয নয়। এমনকি তার সত্যতা নিশ্চিত করার পূর্বে অন্য কারো কাছে তা বর্ণনা কাও জায়েয নয়। হাদীসের ভাষায় এমন ব্যক্তি মিথ্যাবাদী। আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদা করেন-
كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ
“একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে, তা সবই অন্যকে বলে।” -সহীহ মুসলিম ১/৮
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে গোনাহগার হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে, তা সবই অন্যকে বলে।
.
অপর এক হাদীসে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
من حدث عني بحديث يري أنه كذب فهو أحد الكاذبين
“যে ব্যক্তি মিথ্যা জেনেও আমার পক্ষ থেকে কোনো হাদীস বর্ণনা করল, সে দুই মিথ্যবাদীর একজন।” -সহীহ মুসলিম ১/৭
.
সুতরাং আমি নিজে মিথ্যা না বলে যাচাই না করে অন্যের মিথ্যাও যদি আরেকজনকে বলি, সেটার কারণেও আমি আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী ও গোনাহগার হব।