যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবারের গুরুত্ব:
স্যাটেলাইটঃ মানবসৃষ্ট যেসব বস্ত্ত নির্দিষ্ট কতকগুলো কাজের জন্য পৃথিবীর চারদিকে মহাশূন্যে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে পারে, তাদের স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ বলে। স্যাটেলাইটকে যদি ২৪ ঘণ্টায় একবার পৃথিবীকে ঘুরিয়ে আনা যায়, তাহলে পৃথিবী থেকে মনে হয় সেটা যেন আকাশের কোনো এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে। এ ধরনের স্যাটেলাইটকে জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট বলে। আকাশে একবার জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট বসানো হলে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে সেখানে সিগন্যাল পাঠানো যায় এবং স্যাটেলাইট সেই সিগন্যালটিকে নতুন করে পৃথিবীর অন্য পৃষ্ঠে পাঠিয়ে দিতে পারে। এ পদ্ধতিতে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে রেডিও, টেলিফোন, মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেটে সিগন্যাল পাঠানো যায়।
অপটিক্যাল ফাইবারঃ বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সিগন্যাল প্রেরণে স্যাটেলাইটের পাশাপাশি অপটিক্যাল ফাইবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অপটিক্যাল ফাইবার অত্যন্ত সরু একধরনের কাচের তন্তু। শব্দ বা বিদ্যুৎ শক্তিকে আলোক শক্তিতে রূপান্তর করার পর তা অপটিক্যাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অপটিক্যাল ফাইবারে যে আলোকে সিগন্যাল হিসেবে পাঠানো হয়, সেটি ইনফ্রারেড আলো এবং এ আলো আমাদের চোখে দৃশ্যমান নয়। প্রেরক যন্ত্রের মাধ্যমে অ্যানালগ বা ডিজিটাল সংকেতকে প্রয়োজনীয় মডুলেশন করে আলোক সিগন্যাল হিসেবে রূপান্তর করা হয় এবং তা অপটিক্যাল ফাইবারে প্রেরণ করা হয়।
অপটিক্যাল ফাইবারে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে তা গ্রাহক যন্ত্রে পৌঁছায়। ফলে গ্রাহক যন্ত্র কিছু প্রক্রিয়াকরণ শেষে ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দেয়।
অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতর দিয়ে অনেক বেশি সিগন্যাল পাঠানো সম্ভব হয় এবং শুনে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে যে একটি অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতর দিয়ে একসঙ্গে কয়েক লাখ টেলিফোন কল পাঠানো সম্ভব।
বর্তমানে অপটিক্যাল ফাইবার দ্বারা যোগাযোগ এত উন্নত হয়েছে যে পৃথিবীর সব দেশেই অপটিক্যাল ফাইবারের নেটওয়ার্ক দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত। এখন সমুদ্রের তলদেশে সাবমেরিন কেব্ল দিয়ে তথ্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।
মাস্টার ট্রেইনার