অধিকাংশ উলামাগণের মতে এতে করে অজু ভঙ্গ হয় না। এ মতই পোষণ করেছেন চার খলীফায়ে রাশেদ। তথা আবু বকর রাঃ, হযরত উমর রাঃ, হযরত উসমান রাঃ, হযরত আলী রাঃ, হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ, হযরত উবাই বিন কা’ব রাঃ, হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ, হযরত আবু তালহা রাঃ, হযরত আমের বিন রাবীয়া রাঃ, হযরত উমামা রাঃ এবং জমহুর তাবেয়ীগণ এবং ইমাম মালেক রহঃ, ইমাম আবু হানীফা রহঃ, ইমাম শাফেয়ী রহঃ,এবং তাদের ছাত্রবৃন্দ।
অজু ভঙ্গ হয়ে যাবার পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ, হযরত ইসহাক বিন রাহাওয়াই রহঃ, হযরত ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া,, আবু বকর বিন মুনজির, ইবনে খুজাইমা,ইমাম বায়হাকী প্রমুখ। এবং মুহাদ্দিসগণ থেকেও আমভাবে বর্ণিত। একদল সাহাবা রাজিআল্লাহু আনহুম আজমাঈন থেকেও তা বর্ণিত।
যেসব হাদীসে উটের গোস্ত খেলে অজু করার কথা এসেছে। এর জবাব দু’টি। যথা-
১। এসব হাদীস ইসলামে প্রথম যুগের। পরবর্তীতে এ বিধান রহিত হয়ে গেছে।
২। দ্বিতীয় জবাব হল,অজু করার দ্বারা উদ্দেশ্য হল,মুখ ও উভয় হাত ধৌত করা।
উটের বা অন্যান্য হালাল প্রাণীর গোস্ত খাবার পর অজু করার নির্দেশের দ্বারা উদ্দেশ্য কী? তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আরেকটি হাদীস দ্বারা পরিস্কার হয়ে যায়।
হযরত ইকরাশ রাঃ থেকে একটি লম্বা হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যার শেষের দিকে এসেছেঃ
অতঃপর আমাদের পানি দেয়া হল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উভয় হাত ধৌত করলেন। এবং উভয় তালুর ভিজা অংশ দিয়ে চেহারা,বাহু এবং মাথা মাসাহ করলেন। সাথে সাথে বললেনঃ হে ইকরাশ! এটাই হল, আগুণে রান্না করা খাবার ভক্ষণের পরের অজু। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৮৪৮,আলমুজামুল কাবীর লিততাবারানী, হাদীস নং-১৫৪, শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫৪৫৮]
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আশা করি আপনার কাছে পরিস্কার যে, খোলাফায়ে রাশেদীনসহ অধিকাংশ সাহাবাগণের মত হল,উটের গোস্ত খেলে অজু ভঙ্গ হয় না।
আর যেসব হাদীসে অজু ভঙ্গ হবার কথা এসেছে, এর জবাব দু’টি। এ বিধান রহিত হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত অজু করার অর্থ হল, হাত মুখ ধৌত করা। পবিত্রতার জন্য যে অজু করা হয়, সেই অজু করা উদ্দেশ্য নয়।
আমরা খুলাফায়ে রাশেদীন ও অধিকাংশ সাহাবাগণের মতানুসারেই বলে থাকি যে, উটের গোস্ত ভক্ষণে অজু ভঙ্গ হয় না। তবে খাবার পর হাত মুখ ধৌত করে নিবে। এর নাম পবিত্রতার অজু নয়। বরং পরিচ্ছন্নতা।