২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানে বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলা হয়। এর সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে অন্তত দুইজন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জাকির নায়েকের মত ইসলামী বক্তাদের নিয়মিত অনুসরণ করতেন। তার কথায় প্ররোচিত হয়ে ভারতের কয়েকজন তরুণ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে বলে খবর আসে।
এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জাকির নায়েকের বিষয়ে উদ্যোগী হয় ভারত সরকার। মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ।মুম্বাইয়ে তার অফিস ঘিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ভারতের সম্প্রচারমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, “আমরা অভিযোগ তদন্ত করছি। কারণ এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, সেই সঙ্গে সামাজিক সম্প্রীতির জন্যও হুমকি।”
এর জের ধরে বাংলাদেশেও পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের দাবি জোরালো হয়ে উঠতে থাকে।
বাংলাদেশ কেবল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর হোসেন আখতার বলেন, “আমরা পুরো দেশেই চ্যানেলটি বন্ধ করে দিতে চাচ্ছি। তবে সরকারের কোনো নির্দেশনা না থাকায় এই মুহূর্তে তা সম্ভব হচ্ছে না।”
কেবল অপারেটরদের অপর সংগঠন কেবল অপারেটার্স বাংলাদেশের (কব) সাবেক সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, “আমাদের দেশটা শান্তিপ্রিয় দেশ। আমাদের কোনো প্রয়োজন নাই পিস টিভির।”
এই প্রেক্ষাপটে সরকারের ভেতরেও নড়াচড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সেদিন বলেন, “এই টিভিটি সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রণালয়ের অফিস খুললেই কাজ শুরু হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে সরকারের স্ট্যান্ড আমরা স্পষ্ট করব।”
জাকির নায়েক অবশ্য দাবি করেছিলেন, তার বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণরা জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে- এমন অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের লোকজন ‘বিশ্বাস করে না’
এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশ সরকারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশের জঙ্গিদের আমি নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে অনুপ্রাণিত করেছি- এমন অভিযোগ তারাও বিশ্বাস করেন না। তাদের মধ্যে একজন আমার ফ্যান ছিল, সেটা আলাদা বিষয়।”