সূরা নিসার ৩১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ﺇِﻥْ ﺗَﺠْﺘَﻨِﺒُﻮﺍ ﻛَﺒَﺎﺋِﺮَ ﻣَﺎ ﺗُﻨْﻬَﻮْﻥَ ﻋَﻨْﻪُ ﻧُﻜَﻔِّﺮْ ﻋَﻨْﻜُﻢْ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻜُﻢْ ﻭَﻧُﺪْﺧِﻠْﻜُﻢْ ﻣُﺪْﺧَﻠًﺎ ﻛَﺮِﻳﻤًﺎ (31 ) "হে ঈমানদারগণ, তোমরা যদি নিষিদ্ধ ঘোষিত বড় বড় পাপ থেকে দূরে থাক, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ছোট পাপগুলো গোপন রাখবেন এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থান দেবেন।" (৪:৩১) এ আয়াত থেকে যেটা বোঝা যায় তা হলো, গোনাহ বা পাপ আল্লাহর কাছে দু'ধরনের। প্রথমত : ছোট গোনাহ ও দ্বিতীয়ত : বড় গোনাহ। অবশ্য এটা স্পষ্ট যে, গোনাহ বড় হোক বা ছোট হোক তা আল্লাহর নির্দেশের বিরোধী বলে খুবই নোংরা ও অপছন্দনীয় কাজ। পাপের পরিণতি এবং এর কুফলের ব্যাপকতা অনুযায়ী গোনাহকে ছোট ও বড় গোনাহ এ দু'ভাগে ভাগ করা যায়। বিভিন্ন হাদীসে ও বর্ণনায় এসব গোনাহর বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যে গোনাহর পরিধি বা সীমানা যত বেশী বিস্তৃত এবং যে গোনাহ যত বেশী মানুষ, পরিবার ও সমাজের ক্ষতি করে তাকে তত বড় বা কুৎসিততর গোনাহ বলা হয়। একজন সাধারণ মানুষ কোন ছোট গোনাহ করলে তাকে ছোট গোনাহ বলে ধরা হয়। কিন্তু কোন বড় ব্যক্তিত্ব বা নেতা যেমন কোটি জনতার নেতা যদি খুব ছোট গোনাহও করে থাকেন তাহলেও তা বহু মানুষের বিভ্রান্তির জন্য দায়ী বলে তাকে অনেক বড় গোনাহ বলে ধরা হয়। মোট কথা,এই আয়াতে আল্লাহ দয়াপরবশ হয়ে বলছেন,মানুষ যদি বড় বড় গোনাহ থেকে দূরে থাকে তাহলে আমি তাদের ছোট ছোট গোনাহ উপেক্ষা করব এবং তাদেরকে ক্ষমা করে তাদেরকে বেহেশতে স্থান দেব। এই আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো হলো, প্রথমত : আল্লাহ মানুষের ছোট-খাট অপরাধ মাফ করে দেবেন। তাই আমাদেরও উচিত অন্যদের ছোট-খাট অপরাধ ক্ষমা করে দেয়া,সামান্য অপরাধের ব্যাপারে ছিদ্রান্বেষী হওয়া উচিত নয়। দ্বিতীয়ত : যদি আমাদের কাজ কর্ম ও চিন্তাধারার মূলনীতি সঠিক হয়, তাহলে আমরা তওবা করার আগেই আল্লাহ আমাদের ছোট-খাটো অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন। তৃতীয়ত : আমরা যেন মানুষের সম্ভ্রম,সম্পদ ও জীবনের ওপর সব ধরনের আগ্রাসন থেকে দূরে থাকতে পারি এবং আল্লাহর বিধান যথাযথভাবে মেনে চলতে পারি।