ভিনেগার ব্যবহারের কয়েকটি সুবিধা: ১: খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়। চর্বিযুক্ত খাবার রান্নার সময় কিছু ভিনেগার ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়। তা ছাড়া, ভিনেগারের সুগন্ধ খাবারটিকে আরো মজাদার করে তোলে। অনেকে চর্বির গন্ধ পছন্দ করেন না। তারা ভিনেগার দিয়ে রান্না করা চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে দেখুন, ভালো লাগবে। ২: খাবারের অপছন্দনীয় গন্ধ দূর হয়। আপনি কি কখনো মাছ বা ছাগলের মাংস রান্না করেছেন? হ্যাঁ, মাছ ও ছাগলের মাংস রান্না সময় এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যায়। অনেকেই এই গন্ধ পছন্দ করেন না। তো, এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে ভিনেগার। রান্নার সময় একটু ভিনেগার মিশিয়ে দিন, গন্ধ দূর হয়ে যাবে। ৩: ভিনেগার খাবারকে জীবাণুমুক্ত করে ও খাবারের পচন রোধ করে। যেসব খাবার আগুণে সেদ্ধ করে খাওয়া হয় না, সেসব খাবার ভিনেগার মিশিয়ে খেলে সেগুলো জীবাণুমুক্ত হয়। যেমন: শসা, গাজর ইত্যাদি। আচার তৈরির সময় ভিনেগার ব্যবহার করলে, সেই আচার অনেকদিন ভালো থাকে; তাতে পচন ধরে না। ৪: ভিনেগার খাবারের লবণাক্ততা বাড়ায়, লবণ বেশি খাওয়া ভালো নয় আবার খাবারে লবণাক্ততা না-থাকলে, মজাও লাগে না। কোনো সমস্যা নেই। খাবারে ভিনেগার ব্যবহার করুন। তখন লবণ কম ব্যবহার করেও আপনি খাবারে লবণাক্ততার স্বাদ ঠিকই পাবেন। ৫: ভিনেগার খাবারে ব্যবহৃত মশলার তীব্রতা কমিয়ে দেয়। রান্নার পর যদি দেখা যায় ঝাল বেশি হয়েছে, তখন খানিকটা ভিনেগার মিশিয়ে দিন। দেখবেন ঝালের তীব্রতা কমে যাবে। রেস্তোরাঁ খেতে বসেছেন; বুঝলেন খাবারটি অতিরিক্ত ঝাল; ওয়েটারকে ডাকুন, বলুন একটু ভিনেগার দিতে। মিটিয়ে ফেলুন সমস্যা। ৬: খাবারকে ক্ষারের স্বাদমুক্ত করতে সাহায্য করে ভিনেগার। আগেই বলেছি, ভিনেগারে প্রায় ৫ শতাংশ অ্যাসিটিক অ্যাসিড থাকে। আর অ্যাসিড হচ্ছে ক্ষার প্রশমক। সুতরাং খাবারের ক্ষারের স্বাদ প্রশমিত করতে ভিনেগার ব্যবহার করুন। চীনাদের খাবার টেবিলে 'মানথৌ' থাকবেই থাকবে। কিন্তু আপনি জানেন কি, 'মানথৌ' তৈরির সময় সাধারণত আমরা ভিনেগার ব্যবহার করি? ময়দার সঙ্গে পানি মিশিয়ে 'মানথৌ' তৈরির সময় যদি দেখা যায় স্বাদ ক্ষারযুক্ত হয়ে গেছে, তখন ভিনেগার মেশানো হয়। ৭: ভিনেগার খাবারের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। সুন্দর কে না পছন্দ করে! যাকিছু দেখতে সুন্দর, মানুষ তা পছন্দ করে। হ্যা, খাবারের ক্ষেত্রেও কথাটা সত্য। যে খাবার দেখতে সুন্দর সেটি খেতেও ভালো লাগে। অন্তত খেয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। চীনাদের সুস্বাদু খাবারগুলোর মধ্যে ভিনেগার ব্যবহার করা হয় এ কারণেও। ভিনেগার খাবারকে সুস্বাদু করার পাশাপাশি এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, এর উজ্জ্বলতা বাড়ায়। কারণ, ভিনেগারের মধ্যে জৈব অ্যাসিড রয়েছে। এই উপাদান খাবারে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদানের রঙ নষ্ট হতে দেয় না। ৮: খাবার ভালোভাবে সেদ্ধ হতে ভিনেগার সাহায্য করে। আলু রান্নার আগে আপনি প্রথমে ভিনেগারযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর রান্নার সময় পাত্রে আলু দেয়ার পর, আপনি পর্যাপ্ত ভিনেগার দিন। তারপর দেখবেন রান্না করা আলু মুখে দিলে কেমন মিশে যাবে! খেয়ে খুব আরাম পাবেন। চীনের একটি জনপ্রিয় খাবারের নাম 'ছুলিউ থু তৌ সি'। 'ছু' মানে ভিনেগার, 'থুতৌ' মানে আলু আর 'সি' হলো সরু বা fine। ৯: ভিনেগার খাবার দ্রুত রান্না হতে সাহায্য করে। ভিনেগারের মধ্যে রয়েছে জৈব অ্যাসিড। এটি গরু বা ছাগলের মাংস রান্নার সময় ব্যবহার করলে, রান্না দ্রুত শেষ হবে। ভিনেগার ছাড়া রান্না করলে এক্ষেত্রে যে সময় লাগবে, ভিনেগার ব্যবহার করলে সে সময় অর্ধেকে নেমে আসবে। ১০: মাছ বা মাংসের হাড় নরম করে ভিনেগার। রান্নার সময় মাছ বা মাংসের হাড় নরম হতে সাহার্য করে ভিনেগার। তাতে আমরা হাড়ের ক্যালসিয়াম তুলনামূলকভাবে বেশি পেতে পারি। মাছসুপ ও হাড়ের সুপ তৈরীর সময় ভিনেগার তাই অপরিহার্য। ভিনেগার ব্যবহার করলে স্যুপের পুষ্টিগুণ ও স্বাদও বৃদ্ধি পায়। সংগৃহীত