এডুইন হাবল একজন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী যিনি ছায়াপথ, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ এবং মহাবিশ্বের আকার-আকৃতি বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন যে আমরা পৃথিবী থেকে যে কুণ্ডলাকার নীহারিকাগুলো দেখতাম সেগুলো প্রকৃতপক্ষে আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের মতই এক ধরনের ছায়াপথ। তবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ছিল মহাবিশ্বের ক্রম সম্প্রসারণ আবিষ্কার। হাবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের অন্তর্গত মার্শফিল্ডে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর তিনি শিকাগো এবং ইলিয়নিসে উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯১০ সালে গণিত এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। স্নাতক ওত্তর পর্যায়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য তিনি রোড্স বৃত্তি পান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯১২ সালে তিনি আইন শাস্ত্রে একটি ডিগ্রী অর্জন করেন। অক্সফোর্ডের অধ্যয়ন শেষে ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে সপরিবারে কেন্টাকিতে বসবাস শুরু করেন। ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্টাকি ও ইন্ডিয়ানা রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে শিক্ষকতা এবং আইন ব্যবসা করে সময় কাটান। ১৯১৪ সালে উইসকনসিনেশিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ার্কস মানমন্দিরে একটি গবেষণার পদ লাভ করেন। এই পদে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে তিনি কেন্টাকি ছেড়ে উইসকনসিন যাত্রা করেন। ইয়ার্কস মানমন্দিরে কাজ করার সময় হাবল আকাশে কিছু কুণ্ডলাকার বস্তু খুব নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এই কুণ্ডলীহুলো ছিল পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান নীহারিকা। অবশ্য বর্তমানে একে আর নীহারিকা বলা যায় না। বর্তমানে একটি ছায়াপথের অভ্যন্তরে ধূলি এবং গ্যাসের মেঘকে নীহারিকা বলা হয়। হাবল যখন এই পর্যবেক্ষণ করেছিলেন তখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নীহারিকা ও দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের মধ্যে পার্থক্য করতে পারতেন না। কারণ উভয়কেই কুণ্ডলীত বস্তুর মত দেখাতো। হাবল আমৃত্যু গবেষণা করেছেন। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত মাউন্ট পালোমার মানমন্দিরের জন্য ২০০-ইঞ্চি (৫০৮-সে.মি.) দূরবীনের (হেল দূরবীন) নির্মাণের কাজে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৪৮ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। এই সময় থেকে শুরু করে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এটি ছিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দূরবীন। এই সালে হাওয়াইয়ে অবস্থিত মাউনা কিয়া মানমন্দিরের জন্য নির্মীত কেক দূরবীন নির্মীত হয়। এরপর থেকে এটিই সর্ববৃহৎ। সংগৃহীত