ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে ২৬শে সেপ্টেম্বর ১৮২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র। প্রথমে সংস্কৃত ও পরে ইংরেজি ভাষায় পাণ্ডিত্য অর্জন করে তিনি বহু সম্মান ও খ্যাতি লাভ করেন। উনিশ বছর বয়সে বিশেষ পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করে তিনি 'বিদ্যাসাগর' উপাধি লাভ করেন। বদান্যতার জন্য জনসাধারণ তাঁকে 'দয়ার সাগর' আখ্যা দেয়। একাধারে মহাপণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, সমাজ-সংস্কারক ও খ্যাতনামা লেখকরূপে প্রতিষ্ঠা লাভ সাধারণত কম ব্যক্তির ক্ষেত্রেই ঘটে। ১৮৪১ সালে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রধান পণ্ডিত নিযুক্ত হন। তিনি ১৮৫১ সালে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ পদে উন্নীত হন। তিনিই প্রথম বাংলা গদ্যের অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা আবিষ্কার করেন এবং গদ্যভাষায় যতিচিহ্ন যথাযথভাবে প্রয়োগ করেন। ফলে তার গদ্য হয়ে ওঠে শৈলীসম্পন্ন। এজন্য তাঁকে বলা হয় বাংলা গদ্যের জনক। বাংলা বর্ণসমূহ সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে শিশুদের বাংলা বর্ণমালার প্রথম সার্থক গ্রন্থ ১৮৫৫ সালে লেখা তাঁর বর্ণ পরিচয়। এ গ্রন্থ আজও বাংলা ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে পথনির্দেশক। বেতাল পঞ্চবিংশতি, শকুন্তলা, সীতার বনবাস চরিতাবলী, ভ্রান্তিবিলাস প্রভৃতি গ্রন্থ তাঁর প্রধান রচনা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৯১ সালের ২৯শে জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।