একটি প্রাকৃতিক ভূমি, যা নদীর মোহনায় দীর্ঘদিনের জমাট পলি অথবা নদীবাহিত মাটির সৃষ্ট দ্বীপকে বদ্বীপ বলে । নদীর মোহনায় কর্দম, পলি ও বালির সঞ্চয়ন, যার আকৃতি মাত্রাহীন ‘ব’ অক্ষরের মতো। মোহনায় নদীর স্রোতের বেগ এতই হ্রাস পায় যে, নদীবাহিত তলানী আর পরিবাহিত হতে না পেরে নদীর মোহনায় সঞ্চিত হয় এবং চর জেগে ওঠার ফলে নদীস্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে চরের দুই পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে চরের দুই প্রান্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ত্রিকোণাকার আকৃতি প্রাপ্ত হয়। তবে যদি উপকূল ঢালু হয়ে নেমে যায় অথবা নদীবাহিত তলানীকে বাধা প্রদান করার জন্য সমুদ্রস্রোত পর্যাপ্ত শক্তিসম্পন্ন না হয় তবে কোন বদ্বীপ গঠিত হতে পারে না। বদ্বীপ গঠনকালে প্রথমে মোটা পলিকণা এবং পরে সূক্ষ্মকণাসমূহ স্থির হয়। এই জটিল প্রক্রিয়ায় বদ্বীপ গঠনকালে প্রধান নদীখাত একাধিক নদীখাত, শাখানদী, বিচ্ছিন্ন উপহ্রদ, জলাভূমি এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলধারার সমন্বয়ে গঠিত নেটওয়ার্কে বিভক্ত হয়। অধিকাংশ বদ্বীপই জটিল এবং বহুমাত্রিক, তবে একটি সাধারণ বদ্বীপে তিনটি প্রধান ধরনের স্তর চিহ্নিত করা যায়: তলদেশীয় স্তর (bottomset beds), সম্মুখদেশীয় স্তর (foreset beds) এবং পৃষ্ঠদেশীয় স্তর (topset beds)। সাধারণত বদ্বীপের আকৃতি গ্রীক অক্ষর ডেল্টা বা বাংলার মাত্রাহীন ‘ব’ অক্ষরের মতো হলেও বৈচিত্র্যপূর্ণ আকৃতি ও আকারের বদ্বীপও দেখা যায়।