মাকড়সার জাল মূলত রেশম। মাকড়সার দেহে এই রেশম তৈরী করার জন্য থাকে বিশেষ এক গ্রন্থি। এদের তলপেটে থাকা বিশেষ অঙ্গের সাহায্যে এরা তরল রেশমকে খুব পাতলা সুতোয় পরিণত করে নির্গত করতে পারে। এই অঙ্গের সাহায্যে এরা সুবিধা ও প্রয়োজন অনুযায়ী সুতা তৈরী ও নির্গত করতে পারে। কিছু কিছু মাকড়সা তাদের জীবদ্দশায় প্রায় আট ধরণের ভিন্ন ভিন্ন রকমের জাল বুনিতে পারে! সুতাগুলোর ধর্ম হলো এরা নির্গত হওয়ার সময় তরলই থাকে, কিন্তু বাতাসের সংশপর্শে খুব দ্রুত শুকিয়ে যায়। রেশম সুতা নিরগমন শুরু হওয়ার পর মাকড়সারা এদের বিশেষ অঙ্গটিকে বাতাসে দুলিয়ে দেয়। যদি কখনো দুই গাছের মাঝখানে বড় মাকড়সার জাল দেখে থাকেন আর অবাক হন যে কিভাবে এটা সম্ভব হলো, জেনে নিন, আসল রহস্য কিন্তু বাতাস! মাকড়সার জালের সুতা এতটাই পাতলা যে বাতাস যতই মৃদুমন্দ হোক না কেনো, এমনকি বিকিরিত তাপের ফলের মাটির সংস্পর্শে থাকা হালকা হয়ে যাওয়া বায়ুর দোলোনিতেও এরা ভাসতে পারে। মাকড়সা ক্রমেই সুতা ছাড়তে থাকে এবং বাতাসে ভেসে ভেসে এই সুতা নিকটবর্তী কোনো গাছের গুড়ি বা দেয়ালের আটকে যায়। এরপর এরা সেই সুতো বেয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যায় আর জাল বুনতে থাকে।প্রশ্ন দাঁড়ায়, এইসব জালগুলো এমন জ্যামিটিক আকৃতির হয় কেনো? আর মাকড়সারাই বা কিভাবে এই কৌশল রপ্ত করে? আসলে মাকড়সাদের জাল বোনা এদের সহজাত প্রবৃত্তি। বলা যায় এটি জন্মগত গুণ। এই বিশেষ আকৃতি পুরো জালটিকে একত্রিত করে রাখে।