“বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর? জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।” – বিবেকানন্দের সর্বাধিক উদ্ধৃত একটি উক্তি। স্বামী জি'র দেয়া অনেকগুলো বাণীর মধ্যে এই বাণীটির জন্য পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত সকলেরই জানা l স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার আসল নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ১৯শ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতগুলির মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছেলেবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। সাহিত্য, ইতিহাস ও ধর্মগ্রন্থ পাঠে তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। ধর্ম বিষয়ে তিনি উদার ছিলেন। বাইবেল ও দেওয়ান-ই-হাফিজ ছিল তার প্রিয় বই। ভারতে বিবেকানন্দকে ‘বীর সন্ন্যাসী’ নামে অভিহিত করা হয় হয়। বিবেকানন্দ তাঁর শিষ্যদের পবিত্র, অস্বার্থপর হতে এবং শ্রদ্ধা/বিশ্বাস যাতে থাকে সে উপদেশ দেন। তিনি ব্রহ্মচর্য চর্চা করতে উপদেশ দেন। আধুনিক যুগের হিন্দুরা হিন্দুধর্ম সম্পর্কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ জ্ঞান বিবেকানন্দের রচনা থেকেই আহরণ করেন। উনি ছিলেন পথ দ্রষ্টা, উনি আজ পুরো হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের কাছে পথ প্রদর্শক, উনি সকলের গুরু, সকলের প্রভু, ওনার ভাবাদর্শে চলতে শিখতে চায় হিন্দু যুব সমাজ l সংস্কৃততে স্বামী শব্দের অর্থ প্রভু, আর তারই সূত্র ধরে স্বামী বিবেকানন্দের নামের আগে এই স্বামী শব্দের প্রয়োগ, তাকে যথাযথ সন্মান প্রদর্শনের খাতিরে l বিবেক + আনন্দ = বিবেকানন্দ l স্বামী জি তার গুরু অজিত সিংহকে পাকাপাকিভাবে স্বামী বিবেকানন্দ নামটি রেখে দিতে অনুরোধ করেছিলেন।