হড়প্পা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি প্রত্নস্থল। এটি সাহিওয়াল থেকে ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। প্রত্নস্থলটি রাভী নদী [ রাভি নদীর] পুরনো খাতের ধারে অবস্থিত একটি স্থানীয় গ্রামের নামাঙ্কিত। হরপ্পার বর্তমান গ্রামটি প্রত্নস্থল থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আধুনিক হরপ্পা ব্রিটিশ আমল থেকেই একটি ট্রেন স্টেশন। কিন্তু এটি একটি ছোটো পাকিস্তানি শহরমাত্র।প্রত্নস্থলে একটি প্রাচীন ব্রোঞ্জযুগীয় দুর্গশহরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। এটি সেমেট্রি এইচ কালচার ও সিন্ধু সভ্যতার অংশ।মনে করা হয়, শহরটিতে ২৩,৫০০ মানুষ বসবাস করতেন। সেযুগের বিশ্বে এটি ছিল একটি বৃহৎ শহর।
ব্রিটিশ আমলে প্রাচীন হরপ্পা শহরটি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। এই শহরের ধ্বংসাবশেষ থেকে ইঁট এনে তা লাহোর-মূলতান রেলপথ নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হয়।
ইতিহাসঃ
সিন্ধু সভ্যতার (বা হড়প্পা সভ্যতা) মূল নিহিত রয়েছে ৬০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মেহেরগড় সভ্যতার মধ্যে। পাঞ্জাব ও সিন্ধ অঞ্চলের সিন্ধু নদ উপত্যকায় ২৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ সিন্ধু সভ্যতার শ্রেষ্ঠ দু'টি শহর হড়প্পা ও মহেঞ্জোদাড়ো গড়ে ওঠে।এই সভ্যতায় লিখন ব্যবস্থা, নগরকেন্দ্র, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের অস্তিত্ব ছিল। ১৯২০-এর দশকে সিন্ধের সুক্কুরের কাছে মহেঞ্জোদাড়োয় এবং লাহোরের দক্ষিণে পশ্চিম পাঞ্জাবের হরপ্পায় খননকার্য চালিয়ে সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করা হয়। ভারতেও পূর্ব পাঞ্জাবের হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে গুজরাত পর্যন্ত এই সভ্যতার একাধিক কেন্দ্র আবিষ্কৃত হয়েছে। পশ্চিমে বালুচিস্তানেও এই সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। ১৮৫৭ সালে লাহোর-মুলতান রেলপথ নির্মাণের সময় হরপ্পা প্রত্নক্ষেত্রটি ক্ষতিগ্রস্থ হলেও, এখানকার অনেক পুরাদ্রব্যই আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে।