দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন উপযুক্ত খাবার গ্রহণ। অপরদিকে সঠিক খাবারের অভাবে আপনার দেহে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের সমস্যা। অনেক সময় ব্যস্ততা আর সঠিক জ্ঞানের অভাবে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল। এতে করে শরীরে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। একসময় এসব সমস্যা বড় কোনো রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। লক্ষণ বোঝা গেলে সমস্যার প্রতিরোধ করা সম্ভব। শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে এমন কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যার সঙ্গে আমরা মোটেই পরিচিত নই। তাই আসুন গুরুতর এসব সমস্যা এড়াতে জেনে নিই কোন সমম্যায় কোন ভিটামিন প্রতিকার হিসেবে কাজ করে।
অঙ্গ অবশ হয়ে যাওয়া :- মাঝেমাঝেই দেহের নানা অঙ্গ অবশ হয়ে যায়। একটানা একভাবে বসে থাকলে কিংবা নার্ভের ওপর চাপ পড়তে থাকলে এই সমস্যা হতে পারে। তবে আসল ব্যাপার হল, দেহে ভিটামিন বি৯, বি৬ এবং বি১২ এর অভাব হলে এই লক্ষণটি বেশি দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিনের অভাবের কারণে বিষণ্ণতা, রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এসব সমস্যা এড়াতে সামুদ্রিক মাছ, লাল চালের ভাত, বাদাম, ডিম, মুরগীর মাংস, কলা, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং সবুজ শাক খেতে পারেন।
অতিরিক্ত চুল পড়া :- মুখের ত্বকের কোষ মরে যাওয়া ও অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ হিসেবে যত্নের অভাবকে দায়ি করা হয়। কখনো আবার ব্যবহৃত কসমেটিকসকেও দায়ি করা হয়। কিন্তু কোনো ধরণের কেমিক্যালের প্রভাব বা যত্নের অভাব ছাড়াও ভিটামিন বি৭ (বায়োটিন), ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর অভাবজনিত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। সেজন্য মাছ, ডিম, মাশরুম, ফুলকপি, বাদাম ও কলা রাখতে পারেন আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়।
ঠোঁট ফেটে যাওয়া :- বছরের যেকোনো সময় ঠোঁট ফাটা এবং ঠোঁটের কিনার ফাটতে পারে। অধিকাংশ সময় পানিশূন্যতার কারণে এটা হয়ে থাকে। কিন্তু এই সামস্যা ভিটামিন বি৩, বি২ ও বি১২ এবং আয়রন, জিংক ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনকারী গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনের অভাবের লক্ষণ। তাই সামুদ্রিক মাছ, ডিম, মুরগীর মাংস, টমেটো, চীনাবাদাম, ডাল, দই, পনির, ঘি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়।
লাল ও সাদা রঙের ব্রণ :- মুখ, বাহু, উরু এবং দেহের পিঠের নিচের পেছনের অংশে লাল ও সাদাটে রঙের ব্রণ উঠলে আমরা তা নিয়ে একটুও ভাবি না। কারণ আমাদের কাছে ব্রণ একটি সাধারণ সমস্যা এবং যত্ন ও হরমোনের তারতম্যের কারণে ঘটা ব্যাপার। লালচে ও সাদাটে রঙের ব্রণ ওঠা ভিটামিন এ ও ডি এবং এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাবের লক্ষণ। তাই একটানা অনেকক্ষণ এসি ঘরে থাকবেন না, সূর্যের আলোতে বের হন, প্রচুর পরিমাণে মাছ, শাকসবজি ও ডিম রাখুন খাদ্য তালিকায়।
হাতে-পায়ে ঝি ঝি ধরা :- হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরা, পায়ের পাতা, তালু এবং পায়ের পেছনের অংশে ব্যথা অনুভব করার সমস্যায় পড়েন অনেকেই। এই সমস্যাগুলোর মূলে রয়েছে ওয়াটার স্যলুবল বি ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব। সবুজ শাক, কাঠবাদাম, তাল, কমলা, কলা, চীনাবাদাম, ডাবের পানি, কিশমিশ, কাজু বাদাম ইত্যাদি নিয়মিত খেলে এসব সমস্যা দূর করা সম্ভব।