অনেকেই ফোন খুঁজে না পেলে তা খুঁজে বের করতে সঙ্গে সঙ্গে অন্য একটি ফোনসেট থেকে কল দেন এবং রিংটোন শোনার অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু ফোনটি যদি সত্যি হারিয়ে যায় কিংবা কেউ চুরি করে নিয়ে বন্ধ করে ফেলে তবে ফোনের রিংটোন আর বাজে না। তখন ফোন উদ্ধারের চিন্তা বাদ দিয়ে অনেকেই ফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পাওয়ার কথাই ভাবেন। অনেকেই তাঁর শখের ছবিগুলোর জন্য হা-হুতাশ করেন।
প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট পিসিওয়ার্ল্ডের কন্ট্রিবিউটিং সম্পাদক লিংকন স্পেকটরের মতে, চুরি যাওয়া বা হারানো ফোন থেকে ছবিসহ দরকারি তথ্য উদ্ধার করার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তথ্য উদ্ধারের বিষয়টি নির্ভর করছে হারানো ফোনটিতে থাকা সেটিংসের ওপর। এখন যাঁদের হাতে স্মার্টফোন থাকে তাঁরা যথেষ্টই স্মার্ট। তাঁদের ছবি-তথ্য ক্লাউড সেবাগুলোতে সংরক্ষণের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যদি একটু পুরোনো আমলের মোবাইল ফোন হয় তবে সে সম্ভাবনা থাকবে না।
আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে অনেক সময় ছবি তোলার পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্লাউডে আপলোড হয়ে যায়। ক্লাউডে ছবি জমা হওয়ার বিষয়টি ফোনের ডিফল্ট সেটিংসের ওপর নির্ভর করে। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে মূলত ছবি আপলোড হয়ে গুগল ড্রাইভে জমা হয়। তবে ফোন নির্মাতারা অ্যান্ড্রয়েডের ডিফল্ট সেটিংস পরিবর্তন করে দিলে এ সুবিধা থাকে না। যাঁদের কপাল ভাল তাঁরা যেকোনো ব্রাউজার থেকে গুগল ড্রাইভে যেতে পারেন। গুগল অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে গুগল ফটোজে যেতে হবে। কপাল ভালো হলে সেখানে আপনার হারানো ফোনের কিছু ছবি ব্যাকআপ পেতে পারেন। অ্যান্ড্রয়েডের মতো আইওএস প্ল্যাটফর্মেও একই উপায়ে ছবি আইক্লাউডে সংরক্ষিত থাকতে পারে।
ডিফল্ট এই সেটিংসগুলোর বাইরে হারানো ফোনের তথ্য উদ্ধারে ড্রপবক্স বা এ ধরনের কোনো ক্লাউড সেবাও কাজে লাগতে পারে। যদি কখনো এ ধরনের কোনো অ্যাপ্লিকেশন আপনার হারানো ফোনে ইনস্টল করে থাকেন, তবে সেখানেও আপনার হারানো কিছু তথ্য পেয়ে যাবেন। এ ধরনের ক্লাউড সেবাগুলো মূলত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি আপলোড করতে পারে। তবে সম্প্রতি তোলা ছবি এ সেবাগুলোর মাধ্যমে উদ্ধারের আশা না করাই ভালো।
ফোন চুরি হলে বা হারালে অনেক সময় ছবি হারানোর বিষয়টির চেয়েও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও তথ্য অন্যের হাতে পড়া থেকে রক্ষার বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য মোবাইল ফোন অপারেটর বা ফোন নির্মাতার সেবা কেন্দ্র থেকে তথ্য জেনে নেওয়া যেতে পারে। নির্দিষ্ট ফোন নির্মাতা বা অপারেটর ফোনে তথ্য উদ্ধারের কোনো ফিচার রেখেছে কি না, তা শুনে সে অনুযায়ী কাজ করা যেতে পারে কিংবা কোনো দুর্বৃত্ত যেন তথ্য কাজে লাগাতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
প্রতিটি মোবাইল ফোনের সেটিংসে ব্যাকআপ অপশন নামে একটি অপশন থাকে। তথ্য ব্যাকআপ রাখার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা গুগল ড্রাইভে তথ্য রেখে দিতে পারেন। ফোন হারানো বা চুরি হওয়ার আগে ব্যাকআপ রাখলে ক্ষতি কম হয়। তথ্য ব্যাকআপ রাখার জন্য আরেকটি ব্যবস্থা হচ্ছে পিসিতে ড্রপবক্স অ্যাকাউন্ট খুলে রেখে ফোনে ড্রপবক্স অ্যাপ্লিকেশনটি চালু রাখা। ড্রপবক্স সেটিংসে ক্যামেরা আপলোড নামের একটি অপশন থাকে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু থাকে। তথ্যসূত্র: পিসিওয়ার্ল্ড।