বন্ধুত্ব- অদ্ভুত এই সম্পর্ক সংজ্ঞায়িত করা যায় না, জীবনের প্রতিটি বাঁকে অনুভবেই পাওয়া যায় অপার্থিব এই বন্ধুত্বের ছোঁয়া। শুধু সুখ সময়ের সুজন নয়- কষ্ট, দূঃখ, যন্ত্রনা, অপরাধ, দুষ্টুমি এবং সকল গোপনীয় অনুভূতির নিরাপদ আশ্রয় বন্ধুত্ব। একজন বন্ধুর সামনে দাড়ালে প্রায়োজন পড়েনা আয়নার- সমালোচনা, রাগ, অনুনয়, বকাঝকা কিংবা অধিকার খাটিয়েই প্রকাশ করে জীবনপ পথের সঠিক প্রতিচ্ছবি। কিন্তু ইন্টারনেটের এই সহজলভ্যতার যুগে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের দৌরাত্মে এমন বন্ধুত্ব কি সম্ভব?
ফেসবুকে একটি ফ্রি অ্যাকাউন্টের বিনিময়ে পাওয়া যায় ৫ হাজার বন্ধু। আসলেই কি তাদের বন্ধু বলা যায়? ছবি কিংবা স্ট্যাটাসে লাইক অথবা কমেন্টে ভাসিয়ে দিলেই তার নাম বন্ধুত্ব? সময় অসময়ে পিং পং চ্যাটিং কিংবা ইমো দিয়েই হয়ে যায় বন্ধুর সঙ্গে ভাব বিনিময়? অপরিচিত কিংবা স্বল্পপরিচিত তথাকথিত বন্ধুর কাছেই মেলে ধরা যায় নিজের একান্ত জগত?
আজকাল পত্রিকা খুললে, অনলাইন নিউজ পোর্টালে ঢুকলে কিংবা টেলিভিশনে প্রায়ই পাওয়া যায় লুণ্ঠন কিংবা ধর্ষনের সংবাদ। ‘ফেসবুকে বন্ধুত্ব তারপর… ‘ শিরোনামটা এমনই থাকে সেসব খবরে আর নিউজফিড হিসেবে চলে আসে ফেসবুকেরই ওয়ালে। না, বন্ধুত্বের সরল বিশ্বাসকে দোষ দেয়না স্বয়ং স্রষ্টা। তবে যুগের হাওয়া বদলে মানুষ না চিনে বন্ধুত্ব করা কি যথেষ্ট দোষের নয়?
প্রতারণার অভিনব কৌশলে ‘ভার্চুয়াল’ বন্ধুর পাতা জালে আটকে যাচ্ছেন অনেকেই। চ্যাট হিস্ট্রি, খোলামেলা ছবি, উদ্দেশ্য প্রনোদিত বন্ধুত্ব কিংবা ব্ল্যাকমেইলিং- প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছেন অনেকেই। তবে কি বাস্তব জীবনে বন্ধুত্বের অভাব পূরন করতেই ফেসবুক বেছে নিচ্ছেন সকলে? সত্যিকারের বন্ধুর অভাব পূরন করা সম্ভব নয়। ব্যাস্ত বর্তমানে বন্ধুদের সঙ্গে কম যোগযোগ স্বাভাবিক বিষয়- হয়তো তাই ভিন্ন পথ খুঁজতেই অনলাইন বন্ধুদের সঙ্গেই চলছে কথোপকথন। কিন্তু এই আলাপচারিতাই যদি হয় বিপদের কারণ?
উত্তম বন্ধুত্ব আকস্মিকভাবে গড়ে ওঠে না- কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা, সততা ও আত্মত্যাগের ফল। একজন ভালো বন্ধু বাস করে মনের মধ্যে, চেতনার গহীনে। আর তাই বন্ধু প্রতিনিয়তই প্রভাব বিস্তার করে যাপিত জীবনে। বন্ধু নির্বাচনে ভুল হলে চরম মূল্য দিতে