আমাদের শরীরে নানান ক্ষতিকর উপাদান প্রবেশ করে। নিরাপদে সেগুলো শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে যকৃৎ নামের অঙ্গটি। এ ছাড়া শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন, উপকারী চর্বি, পিত্তরস ও অন্যান্য উপাদান তৈরি হয় যকৃতে। এর সুস্থতা তাই খুবই জরুরি। এ বিষয়ে কয়েকটি পরামর্শ:
* ইচ্ছেমতো ওষুধ সেবন করবেন না। সাধারণ ব্যথানাশকের কারণেও কিন্তু যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, যক্ষ্মার ওষুধ, ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধসহ যেকোনো ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা ঠিক নয়। কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো সেবনের আগে যকৃতের কার্যকারিতা দেখে নিতে হয়।
* স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। পরিমিত আহার করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রক্তে শর্করা ও চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ক্ষতিকর চর্বি যকৃতে জমা হয় ও ক্ষতিসাধন করে।
* অ্যালকোহল বর্জন করুন। সামান্য পরিমাণ অ্যালকোহলও যকৃতের ক্ষতি করতে পারে।
* হেপাটাইটিস ‘বি’ ও হেপাটাইটিস ‘সি’-এর কারণে যকৃতের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়, এমনকি যকৃতের ক্যানসারও হতে পারে। তাই এই দুটি ভাইরাস প্রতিরোধ করা জরুরি। হেপাটাইটিস ‘বি’-এর প্রতিষেধক টিকা নিন।
* রক্ত, সুচ ইত্যাদির মাধ্যমে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও হেপাটাইটিস ‘সি’ ছড়ায়। তাই কোনো কারণে রক্ত নিতে হলে পেশাদার রক্তদাতার থেকে না নিয়ে আত্মীয়স্বজন বা কাছের বন্ধুদের রক্ত নিতে চেষ্টা করুন। রক্ত নেওয়ার সময় তাতে কোনো জীবাণুর অস্তিত্ব আছে কি না, অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে। একবার ব্যবহৃত সুচ কোনো অবস্থাতেই আবার ব্যবহার করবেন না।
* জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ সেবন করার আগে যকৃতের অবস্থা জেনে নিন। গর্ভবতী মায়েদেরও কখনো কখনো যকৃতের সমস্যা হতে পারে, যা অনেক সময় জটিল আকার ধারণ করে।
* ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ইয়েলো ফিভারসহ কিছু রোগে যকৃতে সাময়িক সমস্যা হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা নেওয়া হলে এটা সেরে যায়।
অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ
মেডিসিন বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল